বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর। শহরের রাস্তা। পাশেই লতাপাতায় ভরা ঝোপ। সেখান থেকে ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। কোনো শিশু না কি বিড়াল বা কুকুর ছানা কাঁদছে– আঁচ করা মুশকিল। এই চিন্তা থেকেই এগিয়ে যাওয়া। কাছে গিয়ে যা মিলল, তা অবাক করার মতো বটে– ঝোপে পড়ে আছে জীবন্ত ফুটফুটে এক নবজাতক। ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোণার পৌর শহরের উলুয়াটি সড়কের প্রাইমারি বিদ্যালয়ের পাশে ঝোপে।
জানা গেছে, দুপুরে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যালয়ের পাশে ঝোপের মধ্যে কান্নার আওয়াজ শুনতে পান এক সাইকেল আরোহী। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা রীনা আক্তার ও নুরুল ইসলামকে জানালে তারা নবজাতকটিকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবার সহযোগিতায় জেলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে।
শিশু উদ্ধারকারী রীনা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে একটি ঝুপড়ির মধ্যে নবজাতকটিকে এক সাইকেল আরোহী দেখতে পান। বিষয়টি আমাদের জানালে আমি এবং নুরুল ইসলাম চাচা নবজাতকটিকে কোলে তুলে নিই। পরে এলাকার লোকজন পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ এসে আমাকে সঙ্গে যেতে বলে। তখন আমি শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে নার্সদের হাতে দিয়ে আসি।
শিশু বিভাগের (নিবিড় পরিচর্যা ওয়ার্ড) ইনচার্জ মাসুমা আক্তার বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, জন্ম নেয়ার পরপরই নাভি কেটে নবজাতককে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সমাজসেবার দায়িত্বে থাকা মনিরুজ্জামান সোহাগ জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শিশুর সব ধরনের দায়িত্ব সমাজসেবা পালন করবে। এমনকি সার্বক্ষণিক শিশুর তত্ত্বাবধানেও থাকছি আমরা।
নেত্রকোণা মডেল থানার নারী ও শিশু ডেস্কের ইনচার্জ রাজিয়া আক্তার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নবজাতকটি উদ্ধার করে আইনিভাবে হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও এই শিশুর প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাশীম রেজা খান জানান, নবজাতক উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই দত্তক নিতে সন্তানহীন প্রায় ৩০ জনের মতো মৌখিক আবেদন করেছেন।