স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সংঘর্ষের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় ১ হাজার ১১৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১৩২ জন এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ৩ জন।
সোমবার (২২ জুলাই) রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এভাবে এত পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার নজির ইতিহাসে নেই।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, কোটা থাকবে না। সংক্ষুব্ধ হয়ে দুজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আদালতে গিয়েছিলেন। হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছিলেন। সেটিও সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করা হয়েছিল। তারপরও কেন আন্দোলন, সেটাই আমাদের প্রশ্ন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, যারা নাশকতা করেছেন, ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অর্জন বিনষ্ট করার জন্য একের পর এক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। নরসিংদীতে কারাগারে হামলা চালানো হয়েছে। ৯ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, অস্ত্রাগার লুট করা হয়েছে। সেই অস্ত্র দিয়ে নাশকতা করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনেও আগুন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকার গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত থেকে কারফিউ জারি করে। গত রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে শিথিল হচ্ছে কারফিউ। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুর ১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ আশপাশের চারটি জেলায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। অন্য জেলাগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজন অনুযায়ী এই শিথিলের সময় নির্ধারণ করবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েকদিন ধরে চলা নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চলমান কারফিউর মধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য। এতে গত সোম ও মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের কোথাও নাশকতা চালাতে পারেনি দুর্বৃত্তরা। এই পরিস্থিতিতে মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছে এবং জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এজন্য ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিল করা হচ্ছে।