নিজের যোগ্যতায় পেয়েছিলেন চাকরি। কিন্তু কর্মজীবনে গিয়েও মেলেনি শান্তি। সহকর্মীদের কাছ থেকে নিত্যদিনই মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাকে। কখনও চেহারা নিয়ে, কখনও আবার কথা বলা বা খাবার খাওয়ার ধরণ নিয়ে।
দিনে দিনে সহকর্মীদের হাসির পাত্র হয়ে উঠেছিলেন ২৭ বছর বয়সী ওই নারী। শেষমেশ আর সহ্য করতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন তিনি। অফিস থেকে বাড়ি ফিরেই আত্মহত্যা করলেন ব্যাংকে কর্মরত ওই নারী।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে। বুধবার (১৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিবানী তিয়াগী অ্যাক্সিস ব্যাংকের নয়ডা শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। শুক্রবার (১২ জুলাই) গাজিয়াবাদের নিজ বাড়িতে তিনি আত্মহত্যা করেন।
গাজিয়াবাদের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জ্ঞানঞ্জয় সিং বলেন, শিবানীকে তার কর্মক্ষেত্রে শারীরিক গঠন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এছাড়াও তাকে তার কর্মক্ষেত্রে নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে।
তার রুম থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেখানে তার অপমানের বিশদ বিবরণ দেয়া হয়েছে। তিনি তার চিঠিতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করেছেন এবং তাদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন।
প্রথমে শিবানী তার পরিবারকে নির্যাতনের কথা জানাননি। পরে আর সামলাতে না পেরে তিনি কর্মক্ষেত্রে তার প্রতিদিনের সংগ্রামের কথা পরিবারকে জানান।
শিবানীর ভাই গৌরব ত্যাগী একজন নারী সহকর্মীকে উদ্ধৃত করেছেন যিনি প্রায়ই শিবানীকে নিয়ে মন্তব্য করতেন। তিনি তার ড্রেসিং সেন্স, তার খাওয়ার অভ্যাস এবং তার কথা বলার ধরণ নিয়ে কথা বলতেন। শিবানী তার কথা বলেছিলেন বলে জানান গৌরব।
তিনি আরো জানান, একদিন ওই নারী তার বোনকে আক্রমণ করেছিল। এর জবাবে শিবানীও তার পিঠে থাপ্পর মারেন।
গৌরব জানান, শিবানী অনেকবার পদত্যাগ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রতিবার তার প্রতিষ্ঠান কোন না কোন অজুহাত দেখিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে।
থাপ্পড়ের ঘটনার পরে কোম্পানী শিবানীকে বরখাস্তের নোটিশ দেয় যা তার জন্য সবশেষ ধাক্কা ছিল।
অফিসে শিবানী অনেকবার অভিযোগ করলেও কেউ তাতে ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ তার পরিবারের।