‘আমার আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি। তাদের অবস্থা কী জানি না। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করেও আতঙ্কে আছি। সকাল পর্যন্ত এই অবস্থা থাকলে আমরা কেউ বাঁচব না।’
রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এমনভাবে নিজেদের অবস্থার কথা জানাচ্ছিলেন ঘূর্ণিঝড় রেমাল থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাঁকুচিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুখ হোসেন।
আবহাওয়া অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল উপকূলে তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এতে জেলার কলাপাড়া, খেপুপাড়া, রাঙ্গাবালি, বরগুনা, পাথরঘাটা, মনপুরা, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখানসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কোথাও কোথাও তা ৬ থেকে ৭ ফুট ওপর দিয়েও প্রবাহিত হচ্ছে।
পটুয়াখালীর খপুপাড়া রাডার স্টেশনের ইনচার্জ আব্দুল জব্বার শরীফ জানিয়েছেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল হয়ে স্থলভাগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি ৫-৬ ঘণ্টা উপকূলে থাকতে পারে। যা জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিবায়ু উপকূলবাসীকে ক্ষতির মুখে ফেলবে।’
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে বিভাগের ছয় জেলায় তিন লাখের মতো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছেছেন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদী উপজেলা নদী তীরবর্তী হওয়ায় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কালীন ও পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া আছে।’
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় পানির উচ্চতা আরো বেড়েছে।’