জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঘুরতে আসা চার স্কুলছাত্রকে আটকে রেখে মারধর এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বুধবার (২০ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবিরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। তারা হলেন কৃষ্ণ, উৎপল সরকার, সোহাগ বিশ্বাস ও দুর্জয় সরকার। তারা সবাই সাভারের ফোটনগর এলাকার বাসিন্দা।
অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান নাজিজ ও এহসানুর রহমান রাফি। এরা প্রত্যেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীরা জানান, এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ায় তারা দুটি বাইক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন এসে তাদের পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেওয়ার পর বহিরাগত জানতে পেরে তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এরপর আরও তিনজন এসে তাদের অচেনা একটি মাঠে ডেকে নিয়ে যান এবং মারধর করেন।
সেখানে তাদের আটকে রেখে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তাদের কাছে টাকা না থাকায় বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা এনে দেন। এ ছাড়া ভ্লগিংয়ে ব্যবহৃত তাদের ১৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। এরপর তারা গেরুয়া এলাকার একটি দোকান থেকে বিকাশের টাকা উঠিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার সহায়তায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে সক্ষম হন।
তবে ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তরা বলেন, বহিরাগত কয়েকটি ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বাজেভাবে বাইক চালাচ্ছিল। তারা অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসে ভিডিও করছিল। এ সময় তাদের ডেকে কথা বললে তারা তাদের পরিবারকে না জানানোর অনুরোধ করে এবং টাকা দিতে চায়। পরবর্তীতে এক প্রকার জোর করে টাকা এবং ক্যামেরা দিয়ে চলে যায়। তাদের মারধর করা হয়নি।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা শাখার প্রধান সুদীপ্ত শাহীন বলেন, আমরা ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগীদের মোবাইলে থাকা জিপিএস ট্রাক করি এবং বিকাশের দোকান খুঁজে বের করি। এরপর দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে সমর্থ হই। পরবর্তীতে রাত ১০টার দিকে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করে ভুক্তভোগীদের হারানো জিনিসপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আলমগীর কবির বলেন, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তরা ঘটনা স্বীকার করে টাকা ও ক্যামেরা ফেরত দিয়েছে। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।