বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, দেশে কেউ টানা দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক কর্মশালায় এক শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে কর্মশালায় যোগ দিয়ে তিনি বলেন, দশ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকলে একজন ব্যক্তি শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং আন্তরিকভাবে কাজ করতে পারেন না।
‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এই কর্মশালায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটি এই কর্মশালার আয়োজন করে।
তারেক রহমান আরও ঘোষণা দেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের বিধান রাখা হবে না।
কর্মশালায় তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি, পরিবেশ, পানি সম্পদ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার ও উন্নয়ন নিয়ে বিএনপির পরিকল্পনা তুলে ধরেন। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার একসঙ্গে প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, তাহলে আমরা যতই সংস্কারের কথা বলি না কেন, কোনো লাভ হবে না।’
দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে দেশকে মুক্ত করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে দুদক স্বাধীন ছিল এবং সরকারের অনুমতি ছাড়াই যে কারও বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারত।
তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধি, প্রাথমিক শিক্ষায় জোর দেওয়া, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য তৃতীয় ভাষা (ইতালীয়, ফরাসি, জার্মান, ম্যান্ডারিন, আরবি বা জাপানি) শেখা বাধ্যতামূলক করার কথাও বলেন।
প্রতি পরিবারের জন্য ‘পরিবার কার্ড’ এবং কৃষকদের জন্য ‘কৃষক কার্ড’ চালুর ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবার কার্ডের’ মাধ্যমে প্রতি পরিবারকে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। ‘কৃষক কার্ডের’ মাধ্যমে সার সহায়তা, ফসল বীমা এবং ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যসেবায় ‘পল্লী চিকিৎসক’ প্রকল্প পুনরায় চালু করে প্রতি গ্রামে একাধিক চিকিৎসক, বিশেষ করে নারী চিকিৎসক নিয়োগের কথা বলেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ এবং ঐতিহ্যবাহী সরবরাহ ব্যবস্থার পাশাপাশি নতুন সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর প্রতিশ্রুতি দেন।
পরিবেশ উন্নয়নের জন্য খাল-বিল খনন, জলাধার নির্মাণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির কথাও তুলে ধরেন তিনি।