মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে সংঘাত-অস্থিরতা। ইসরায়েলের এ সংঘাত থামাতে দেশটিতে বিভিন্ন দেশের প্রতিরোধ যোদ্ধরা ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। ইসরায়েলের সামরিক অবস্থানকে নিশানা করে হামলা ইরাকের প্রতিরোধ যোদ্ধারা।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইরানপন্থি ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স জানিয়েছে, তারা দখলকৃত অঞ্চলের দক্ষিণে ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করে ড্রোন ছুড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাকের প্রতিরোধ যোদ্ধারা ড্রোন হামলার দাবি করলেও তাদের লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানায়নি। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, দখল প্রতিরোধে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ধারাবাহিকতা এবং ফিলিস্তিন ও লেবাননে আমাদের জনগণের সমর্থনে এ হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, পূর্ব দিক থেকে আসা একটি ড্রোনকে বাধা দিয়েছে। এ ছাড়া অধিকৃত গোলান মালভূমি এলাকায় সাইরেন বাজতে শোনা গেছে।
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে
গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে… দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এ অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এ অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।