ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরার আহ্বান জানানোর পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনকে পদ থেকে টেনে নামানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তারা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতিকে সরকারের কেউ কেউ পুনর্বাসন করতে চাইছে।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমাবেশে এসব কথা বলা হয়।
সমাবেশে ক্ষমতাচ্যুতির পর ভারতে চলে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতিকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করতেও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।
ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আজকে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ ‘খুনিদেরকে’ পুনর্বাসন করার বক্তব্য দিচ্ছেন। আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আপনি উপদেষ্টা হয়েছেন।
সুতরাং যখন কোনো বক্তব্য দেবেন, আপনার সামনে যেন ৫ অগাস্টের গণভবনের চিত্রটা যেন মাথায় থাকে। যারা স্বৈরাচারকে পুনর্বাসন করতে চায়, ‘খুনি’ হাসিনাকে পুনর্বাসনের মত বক্তব্য দিতে চায়, আমরা ছাত্র-জনতা যেভাবে তাদেরকে উপদেষ্টা বানিয়েছি, ঠিক একইভাবে গদি থেকে ছুড়ে নামাতে দ্বিধা করব না।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আন্দোলনে প্রায় সাড়ে চারশ মানুষ নিহত হন। গত ৫ আগস্ট তুমুল গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান।
সোমবার সচিবালয়ে এক আয়োজনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনি ভালো থাকেন, আবার আসেন। আমরা সবাই আপনাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু গন্ডগোল পাকানোর মানে হয় না, গন্ডগোল পাকিয়ে তো লাভ হবে না। এতে লোকজন আরো ক্ষেপে উঠবে।
আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের পরামর্শও দিয়েছেন এই উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। সে দলে প্রচুর ভালো ভালো নেতা আছে, আমি এখনই নাম বলতে পারি।
এ দলটা একসময় বাঙালিদের সেক্যুলারপন্থি দল ছিল। বাঙালি আপার ক্লাস মুসলিম লীগে ছিল, আর মিডল ক্লাসের দল ছিল আওয়ামী লীগ।
একই দিন সকালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত আনসার সদস্যদের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দেখতে গিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগকে দল গোছানোর পরামর্শ দেন।