Wednesday, December 18, 2024

থানা থেকে লুট করা অস্ত্র নিয়ে টিকটক করতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু

আরও পড়ুন

ফরিদপুরের সদরপুরে থানা থেকে লুট করা অস্ত্র নিয়ে তিন বন্ধু টিকটক করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন পলাশ হোসেন (১৮) নামে এক যুবক। সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত পলাশ সদরপুর উপজেলার আটরশি গ্রামের মোশারফ হোসেনের বড় ছেলে। মোশারফ হোসেন একটি খাবার হোটেলের মালিক। উপজেলার আটরশি মোড়ে তার দোকান রয়েছে। পলাশ তার বাবার সঙ্গে হোটেলেই কাজ করতেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট সকালে পলাশ তার বাবার হোটেলে কাজ করছিলেন। এ সময় তার দুই বন্ধু সদরপুর সরকারি কালেজের একাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী পলাশকে হোটেল থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তারা আড়াই রশি গ্রামে পলাশের নানা মোসলেম মাতুব্বরের বাড়িতে যান।

আরও পড়ুনঃ  কোমরে পিস্তল সদৃশ গ্যাস লাইটারসহ ধর্মমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, দুই যুবক আটক

ওই বাড়ির একটি কক্ষে তারা তিনজন একত্রিত হয়ে গত ৫ আগস্ট সদরপুর থানা থেকে লুট করে নেওয়া একটি শর্টগান নিয়ে টিকটক ভিডিও করার জন্য অস্ত্রটি একে অপরের মাথায় তাক করে অভিনয় করতে থাকেন। হঠাৎ শর্টগান থেকে গুলি বের হয়ে তা পলাশের মাথায় লাগে। গুলির শব্দ এবং পলাশের চিৎকার শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজন ছুটে যান সেই কক্ষে। সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পরে থাকতে দেখা যায় পলাশকে।

পলাশকে প্রথমে আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর থেকে ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ছয় দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ভোরে মারা যান পলাশ।

আরও পড়ুনঃ  দাফনের জায়গা নেই, মায়ের লাশ নিয়ে অপেক্ষা সন্তানের

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, পলাশকে গুলি করা অস্ত্রটি সদরপুর থানা থেকে লুট হওয়া একটি শর্টগান। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বিকেলে সদরপুর থানা থেকে ওই শর্টগান লুট করা হয়েছিল। অস্ত্রটি আটরশির একটি পরিত্যক্ত ভবন থেকে উদ্ধার করে সদরপুরের আনসার বাহিনী এবং সেটি পরে ফরিদপুর সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তবে নিহত পলাশের মা পারুলি আক্তার দাবি করেছেন, সদরপুর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে তার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। থানার কাজকর্ম শুরু না হওয়ায় এ ব্যাপারে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার

সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পলাশের মা পারুলী আক্তার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পলাশের মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ হত্যা মামলাটি তদন্ত করলে জানা যাবে থানা থেকে লুট করে নেওয়া অস্ত্র দিয়ে বন্ধুরা টিকটক করতে গিয়ে গুলি বের হয়ে পলাশ মারা গেছেন নাকি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ