কোটা সংস্কারপন্থীদের চলমান আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের থামাতে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ। সংগঠনটির সভাপতি চলমান আন্দোলনটিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (১৫ জুলাই) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
শুরুতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুরু করে। এদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পেটাতে ছাত্রলীগের আহ্বানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা গেছে রাজধানীর বাঙলা কলেজ, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। তাদের সাথে ছিলেন বেসরকারি গ্রিন ইউনিভার্সিটির বহিষ্কৃত এক শিক্ষার্থীও।
তিনি বেসরকারি গ্রিন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। গ্রিন ইউনিভার্সিটির থেকে সাম্প্রতিক বহিষ্কৃতদের মধ্যে ছিলেন ৩য় সেমিস্টারে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নেছার খান নামের এই শিক্ষার্থীও। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
এর আগে বিগত ১২ই জুন গ্রিন ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার শেখ সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ‘গাড়ি ভাংচুর, সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভে অংশ নেয়া, রাষ্ট্রীয় আইন লঙ্ঘন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এর আগে গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা কোটা পাবে না, তো কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে?’ এমন বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে মুখর হয়ে পড়েন।
এদিকে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ। এরপর থেকে রাজু ভাস্কর্য দখলে নিয়েছে তারা। শেষ খবর পাওয়া সোয়া ৫টার দিকে শেখ রাসেল টাওয়ার এলাকায় আন্দোলনকারীদের ধরে আবার মারধর করে এবং সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসারতদেরও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
এর আগে গতকাল রাত থেকেই কোটা সংস্কার ইস্যুতে চলমান আন্দোলন নতুন রূপ পেতে শুরু করে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এরপর রাত দুইটার দিকে তারা হলে ফিরে যান এবং আজ সকালে থেকেই আন্দোলন নতুন দানা বাধতে থাকে।
পরবর্তীতে বিকেলের দিকে ছাত্রলীগ আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।