Thursday, November 21, 2024

স্বামীর দ্বিতীয় বিয়েতে হাজির স্ত্রী, এলাকায় তোলপাড়

আরও পড়ুন

বাড়ির সামনে বিয়ের গেট। আলোকসজ্জাও করা হয় বিয়েবাড়িতে। আসতে শুরু করেন আত্মীয়স্বজন-পাড়াপ্রতিবেশীরাও। যখন বরযাত্রা রওনা হবে, ঠিক তখনই বাবার বাড়ি থেকে ছুটে আসেন ইতালীপ্রবাসী আল আমিনের প্রথম স্ত্রী অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী। এরপরই ভন্ডুল হয়ে যায় বরযাত্রা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে টেনে-হিঁচড়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় অনার্স পড়ুয়া সেই ছাত্রীকে। মারধর করায় অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। এদিকে প্রথম স্ত্রী আসার খবরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় আল আমিন।

শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের উত্তর শিরখাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। অভিযুক্ত আল আমিন ওই এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

জানা যায়, তিন বছর আগে অনার্স পড়ুয়া এক মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় ইতালীপ্রবাসী আল আমিনের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক হলে, দুজনের পরিবারকে জানানো হয়। সবার সম্মতিতে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি মেয়েটির বাড়িতে আসে বরপক্ষ। সেখানে বসে আল আমিন ইতালী থাকা অবস্থায় মোবাইলফোনের মাধ্যমে দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিয়ে আসা হয় স্বামীর বাড়িতে।

আরও পড়ুনঃ  নারীসহ ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন এমপি আনার

এর কিছুদিন পর মেয়েটি বাবার বাড়িতে চলে আসে। এক মাস আগে ইতালী থেকে বাড়িতে আসে আল আমিন। স্ত্রীকে না জানিয়ে অন্যত্র বিয়ে করবে, এমন খবরেরই শুরু হয় হট্টগোল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসে পুলিশও।

ভুক্তভোগী মেয়েটি জানায়, পারিবারিকভাবে আল আমিনের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। আমাকে কিছুই না জানিয়ে আল আমিন অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি কিছুতেই তা মেনে নিতে পারছি না। আমি প্রয়োজনে থানায় যাব, থানা পুলিশ সহযোগিতা না করলে, আমি আদালতের দ্বারস্থ হব। আমি আমার স্বামীর স্বীকৃতি আদায় করেই ছাড়ব।

আরও পড়ুনঃ  শীর্ষ দুই রুশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

অভিযুক্ত আল আমিনের বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ছেলের সাথে ওই মেয়েটির বিয়ে হয়েছে। কিন্তু এখনও ডিভোর্স হয়নি। সেই ডিভোর্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আমার ছেলেকে আমরা অন্যত্র বিয়ে করাতে চাই। সেই প্রস্তুতিও ঠিকভাবে নেওয়া হয়েছে। মেয়েটি খারাপ, এজন্য তাকে আমার বাড়িতে আর তুলব না।

শিরখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও আল আমিনের চাচাতো ভাই নুর হোসেন বলেন, আল আমিন ভুল বুঝে ওই মেয়েটিকে বিয়ে করেছিল। পরে মেয়েটি আরেকটি ছেলের সাথে চলে যায়। শুনেছি সেই ছেলের সাথে আবারও মেয়েটির বিয়ে হয়েছে। এজন্য এই বাড়িতে মেয়েটিকে আর গ্রহণ করা হবে না।

আল আমিনের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য জানান, প্রয়োজনে মামলা হবে। আইনগতভাবে সমাধান হবে। তবুও ওই মেয়েটিকে আমরা আর কখনই মেনে নেব না।

আরও পড়ুনঃ  মধ্যরাতে জবির মসজিদে ছাত্রী, ইমামকে অব্যাহতি

মাদারীপুর সদরের শ্রীনদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) মো. বাবুল আক্তার বলেন, একটি উত্তেজনার খবর পেয়ে আল আমিনের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখানে প্রথমে আল আমিনের বাবা মোহাম্মদ আলী উপস্থিত থাকলেও পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে তিনিও পালিয়ে যান। এছাড়া মেয়েটি বাড়িতে হাজির হওয়ার খবরে আল আমিন সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায়। মেয়েটিকে মারধর করা হয়েছে, এমন অভিযোগে মামলা করলে আসামি ধরে আদালতে পাঠানো হবে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন জানান, ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ