ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে তানজিলা আক্তার তহেরা (২১) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী জিসান আহমেদের (২১) বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে অভিযুক্ত জিসানকে আটক করে পুলিশ। বুধবার রাতে নিহত তানজিলার বাবা ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশসূত্রে জানা গেছে, জিসান ও তানজিলার মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিলো। যৌতুকের জন্য তানজিলার ওপর নির্যাতন করা হতো। জিসানের পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও তানজিলার শরীরে স্বাভাবিক কিছু জখমের চিহ্ন রয়েছে।
নিহত তানজিলার বাবা তোবারেজ মোল্লা বলেন, ‘আমার মেয়েকে পিটিয়ে মেরেছে জিসান। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য জিসান ও তার মা জবেদা বেগম আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন করতো। জিসানকে মোটরসাইকেল দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতো। আবার জিসানকে বিদেশে পাঠাবে বলে টাকা চেয়ে পাঠাতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার রাত ৮টার দিকে আমার মেয়ের সঙ্গে কথা হয়। রাত ১২টার দিকে আমার মেয়ের নাম্বার দিয়ে জিসানের এক বন্ধু ফোন করে বলে তানজিলা আত্মহত্যা করতে চেয়েছে আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। খবর পেয়ে রাতেই আমরা হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখি। জিসান বা কাউকে আমরা তখন কাছে পাইনি।’
তোবারেজ মোল্লা বলেন, ‘আমার মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জিসান নেশাগ্রস্ত ছিলো। যৌতুক না পেয়ে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ভাড়া বাড়িতে থাকার আগে যখন শ্বশুর বাড়ি ছিলো তখন শ্বশুর বাড়ির লোকজনও তাকে নির্যাতন করত।’
এদিকে তানজিলাকে হত্যার কথা অস্বীকার করে জিসানের মা জবেদা বেগম বলেন, ‘জিসান ও তানজিলা দুজন ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো। আমরা কখনও যৌতুকের জন্য তানজিলাকে নির্যাতন করিনি। জিসান আমাকে বুধবারের ঘটনা যা বলেছে তা হলো, জিসান বাইরে ছিল, রাত ১০টার পরে তানজিলার ফোনে সে বাড়ির উদ্দ্যেশে রওনা হয়।
বাড়িতে গিয়ে সে দরজা বন্ধ দেখতে পায়। এরপর পাশের এক দোকান থেকে রড নিয়ে দরজা ভেঙ্গে দেখতে পায় তানজিলা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। তারপর স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. সালাউদ্দিন জানান, ‘এ ঘটনার তানজিলার বাবা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা জিসানকে আটক করেছি। তবে এখনেই এটিকে হত্যা বলতে পারছি না। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়ে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে বলা যাবে। আমাদের আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে।’