ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে দুই নির্মাণশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ সদস্যসহ গুরুতর আহত হয়েছেন আরও আটজন। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সাথে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার গণপিটুনিতে দুইজন শ্রমিক নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।
নিহত দুই নির্মাণ শ্রমিক হলেন- মধুখালী উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও তার ভাই আশাদুল (১৫)।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের বারোয়ারী মন্দিরে আগুনের ঘটনা ঘটে। এরপর এই আগুন দেওয়ার অভিযোগে মন্দিরের পাশের স্কুলে নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু অধ্যুষিত পঞ্চপল্লী গ্রামের ওই বারোয়ারি মন্দিরের কালী প্রতিমায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা মন্দির থেকে ২০ গজ দূরের পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশরুম নির্মাণকাজে নিয়োজিত মুসলিম সাত শ্রমিককে সন্দেহ করে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে অবরুদ্ধ করে মারপিট করে।
খবর পেয়ে মধুখালী থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনা স্থলে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখে, এবং হতাহতদের উদ্ধারে বাধা দেয়। পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ৪ জনকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন মারা যান। আহত আরও দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, এখানে কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছিলেন। উত্তেজিত জনতা ভেতরে ঢুকে তাদের লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে মধুখালী থানার ওসি ফোর্সসহ এখানে আসে। তাদের সঙ্গে মধুখালী উপজেলার ইউএনও ছিলেন। তারা এখানে এসে উত্তেজিত জনতার হাতে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে আমরা ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত ফোর্সসহ এসে তাদেরসহ আহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে ফরিদপুরে হাসপাতালে পাঠাই।