Friday, November 22, 2024

হত্যাচেষ্টা ও চুরির অভিযোগে নায়িকা ববির বিরুদ্ধে মামলা, ববির পক্ষেও পাল্টা মামলা

আরও পড়ুন

চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববির বিরুদ্ধে চুরি ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করার অভিযোগে মামলা করেছেন গুলশানের ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে ববির সহযোগী মির্জা আবুল বাশারকে (৩৪) এবং দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে ববিকে।

গত ২৩ জুন দুপুরে গুলশান থানায় মামলা করেন সাকিব। মামলার সত্যতা স্বীকার করেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম। মামলায় বলা হয়েছে, ‘হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করিয়া সাধারণ ও গুরুতর জখম, চুরি, ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধ। এ ঘটনায় ওয়াইএন সেন্টারের ক্ষতির পরিমাণ দেড় লাখ টাকা ও চোরাই এক লাখ টাকা যা এখনো উদ্ধার হয়নি।’

মামলার বাদি মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা জানান, তাদের কাছ থেকে রেস্তোরাঁটি ভাড়া নেন আমান নামের একজন। এটার অবস্থান গুলশান-২ এর ১১৩ নম্বর সড়কে। আমান অর্থনৈতিকভাবে পুষিয়ে উঠতে পারছিলেন না। পরে ব্যবসায় তৃতীয় পক্ষ হিসেবে যুক্ত করেন আবুল বাশার ও চিত্রনায়িকা ববিকে। রেস্তোরাঁটির জিনিসপত্র তারা কিনে নিয়েছেন। সেভাবেই চুক্তি করেন।

আরও পড়ুনঃ  আ. লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ৭

ব্যবসার অংশ হিসেবে চুক্তিমতো আমানকে ৫৫ লাখ টাকা দেয়ার কথা ছিল। ববি ও বাশার প্রথমে ১৫ লাখ, পরে ১০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। কিন্তু দুটি চেকই ব্যাংক থেকে ডিজঅনার হয়। এই টাকা চাওয়া নিয়েই আমান ও বাশার–ববির সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

সাকিব উদ্দোজা আরও বলেন, আমান একসময় আমাদের তৃতীয় পক্ষের কাছে ভাড়া নিতে বলে। কয়েক মাসের ভাড়া বকেয়া থাকলেও মে মাসের ভাড়া দেন তারা। পরে তারা একই রসিদ দিয়ে আরও একটি বিল তৈরি করেন। সেখানে লেখা ছিল, ‘ওয়াইএনসি কর্তৃপক্ষ আরও সাত লাখ টাকা বুঝে পেয়েছে।’ যা ছিল মিথ্যা। পরে আমরা বুঝতে পারি যে বাশার লোকটি অসৎ। তাকে আগের ভাড়ার নকল রসিদের কথা বললে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আমাদের লোকেদের মারতেও আসেন। তখন আমাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। বুঝতে পারি যে পেশিশক্তি খাটিয়ে রেস্টুরেন্ট দখল করতে চান বাশার। আমরা প্রথমে থানায় অভিযোগ করি ও ১৩ জুন জিডি করি।

আরও পড়ুনঃ  ‘আমার ছেলে তো রাজনীতি করত না, কেন গুলি করে মারল’

এ ঘটনায় ববি ও বাশারও পাল্টা মামলা করেছেন। ববির পক্ষ হয়ে মো. আব্বাস মামলা করেন। ভবনের মালিক শাহিনা ইয়াসমিন, তার সন্তান জাওয়ান আল মামুনসহ ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের নামে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পরস্পর যোগসাজশে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে গুরুতর জখম করা হয়েছে। ৫৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করা হয়েছে। একটি ঘড়ি চুরি হয়েছে, যার দাম চার লাখ টাকা। এ ছাড়া নগদ এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা, দেড় ভরি স্বর্ণের চেইন ও একটি আইফোন চুরি হয়েছে। যা উদ্ধার হয় নাই।

এ ঘটনা নিয়ে ববির অপারেশন পার্টনার (সহযোগী) আবুল বাশার বলেন, রেস্তোরাঁ করার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হই। মূলত এটা ববির রেস্তোরাঁ হওয়ার কথা ছিল। আমি ছিলাম অপারেশন পার্টনার। ববির পক্ষ থেকে কাজ করতাম। মে মাসের ভাড়াও দিয়েছি। আমাদের ইনভেস্টমেন্ট ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার মতো হয়ে গেছে। এখন বিষয়টা দেখেন, যখন ববি কোনো রেস্টুরেন্ট করবে, সেটার কাগজপত্র নিয়ে অনেকের আগ্রহ থাকবে। সেই কারণেই আমরা মালিকপক্ষের কাছে পরে ভবনের বৈধতার কাগজ চাই। দিব দিব করে তারা ঢিলেমি করেন। এখান থেকেই ঝামেলা শুরু হয়।

আরও পড়ুনঃ  সব জেলার ডিসিকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

মারধরের ভিডিও রয়েছে উল্লেখ করে বাশার বলেন, অনেক বলার পরও বৈধ কাগজ দেন নাই। পরে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। তা ছাড়া ফায়ার এক্সিট নাই। এটা–সেটা নিয়ে ঝামেলা করেন। একদিন গিয়ে দেখি, আমাদের জিনিসপত্র সব বাইরে ফেলে রেখেছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো আমাকে মেরে তারা নাটক সাজান। আমার কাছে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। যারা আমাকে মেরেছেন, তারা সবাই ওই ভবনে থাকে। বাধ্য হয়ে মার খেয়ে চলে আসি। আমি ছিলাম একা আর তারা ছিলেন ১৫ থেকে ২০ জন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ