মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তাজিকিস্তানে হিজাব পরিধান নিষিদ্ধ করে আইন পাস হয়েছে। দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষে আইনটি পাস হয়। এ ছাড়া আইনটির মাধ্যমে ঈদ উদ্যাপনেও বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে।
এশিয়া প্লাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৯ জুন) মজলিসি মিলির ১৮তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিলটি উত্থাপন করা হলে তা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়।
আইনে হিজাবকে ‘এলিয়েন পোশাক’ বলে উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে ঈদ উদ্যাপনকে বিদেশি সংস্কৃতি বলা হয়। আর দেশটি তা সমর্থন করতে পারে না বলেও যুক্তি তুলে ধরা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়, শিশুরা ঈদ উদ্যাপনে বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবে না। দেশটিতে তা ‘ইদগারদাক’ নামে পরিচিত। মূলত শিশুরা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন সড়ক ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে লোকজনকে অভিবাদন জানায়।
এর আগে তাজিকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ ‘মজলিসি নমোয়ানদাগন’ ৮ জুন হিজাব ও ইদগারদাক নিষিদ্ধ করার বিলটি অনুমোদন করে।
মজলিসি মিলি প্রেস সেন্টার বলছে, অধিবেশনে ছুটির দিন, ঐতিহ্য ও আচার-অনুষ্ঠান, সন্তান লালনপালনে শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা, পিতামাতার দায়িত্ব সংক্রান্ত দেশের আইনের সংশোধনীকে সমর্থন করা হয়েছে।
আইনটি মূলত হিজাব, ইসলামিক হেড স্কার্ফ ও ইসলামিক পোশাকের অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী ধরনকে লক্ষ করে প্রণীত। বলা হচ্ছে, এসব পোশাক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাজিকিস্তানে আসতে শুরু করে এবং দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারের কর্মকর্তারা এ পোশাক ধারণকারীদের ইসলামিক চরমপন্থিদের সঙ্গে তুলনা করছেন।
তাজিকিস্তান মধ্য এশিয়ার স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর উত্তরে কিরগিজস্তান, উত্তরে ও পশ্চিমে উজবেকিস্তান, পূর্বে গণচীন এবং দক্ষিণে আফগানিস্তান। দুশান্বে দেশের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।
দেশটির ৯৬.৪ শতাংশ অধিবাসী মুসলমান। তাজিকিস্তানে ২০০৯ সালে ইসলামকে সরকারি ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়টি সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর মধ্যে তাজিকিস্তানকে আলাদা করে তুলেছে। তবে তাজিকিস্তানে অন্য যেকোনো ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
বাকিদের মধ্যে অর্থোডক্স, প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও ইহুদি রয়েছে। তাজিকিস্তানের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করতে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোকে নিবন্ধন করতে হয়। এই নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল উপাসনার জন্য একত্রিত হতে পারে না। এর ব্যতিক্রম করলে বড় অঙ্কের জরিমানার পাশাপাশি তাদের উপাসনাস্থল বন্ধ করে দেওয়া হয়।