Friday, November 22, 2024

সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু, এলাকায় রাসেলস ভাইপারের আতঙ্ক

আরও পড়ুন

বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের মধ্য আঙ্গুলকাটা গ্রামে সাপের কামড়ে রেজিমোন (৫০) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন। এর পর থেকে ওই ইউনিয়নের সর্বত্র রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতের পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে দেখা মিলছে ওই বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপের। বিষধর ওই সাপ সম্পর্কে গ্রামগঞ্জের মানুষের মধ্যে কোনো ধারণা নেই বললেই চলে।

ইতিপূর্বে পার্শ্ববর্তী জেলা ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে দু-একটি জায়গায় রাসেলস ভাইপার প্রজাতির সাপ ধরা পড়লেও তা বনে অবমুক্ত বা পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের মধ্য আঙ্গুলকাটা গ্রামের আর্শ্বেদ আলী হাওলাদারের স্ত্রী রেজিমোন বেগম ফজরের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ির পুকুরের ঘাটে ওজু করতে যান। ওই সময় তার পায়ে সাপ ছোবল দেয়। তার চিৎকারে বাড়িতে থাকা স্বজনরা এগিয়ে এসে দেখতে পান রেজিমোন মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন এবং তার পায়ে সাপে কাটার চিহ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  কোটা আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন শিবির সভাপতি

মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তিনি অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। স্বজনরা তাৎক্ষণিক পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনার পর থেকেই গুলিশাখালী ইউনিয়নের সর্বত্র এখন রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে। অতি অল্প সময়ে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হওয়ায় গ্রামবাসীর ধারণা, রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়েই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

রেজিমোন বেগমের স্বামী আর্শ্বেদ আলী হাওলাদার বলেন, ‘ফজরের নামাজ পড়ার জন্য আমার স্ত্রী ঘাটে যায় ওজু করার জন্য। ওই সময় তাকে সাপে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে আমরা পরিবারের লোকজন ছুটে গিয়ে তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খুব অল্প সময়ে তার মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপে কামড় দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  একই পরিবারের তিন শিশু নিখোঁজ, ফিরে পেতে বাবা-মায়ের আকুতি


মধ্য আঙ্গুলকাটা গ্রামসহ গুলিশাখালী ইউনিয়নে বসবাসরত একাধিক বাসিন্দা জানান, সাপের কামড়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হওয়ার পর থেকেই ওই গ্রামসহ ইউনিয়নের সর্বত্র এখন রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে। সন্ধ্যার পর গ্রামের লোকজন এখন আর তেমন একটা ঘরের বাইরে থাকে না। অনেকে হাতে লাঠি নিয়েও রাস্তায় চলাচল করে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন, ওই সময়ে একটু সাপের আতঙ্ক বেশি থাকে, তাই সকলকে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  খালে জাল টেনে খোঁজা হচ্ছে এমপি আনারের লাশের টুকরো

তথ্য অনুযায়ী, উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতেই ওই সাপের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। ওই প্রজাতির সাপের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। তবে বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ওই প্রজাতির সাপের উপস্থিতি বেড়ে গেছে। উত্তরবঙ্গে রাসেলস ভাইপার সাপ চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামে পরিচিত।

সাপটির গায়ের রং এবং চিত্রাকৃতির হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ ওটিকে নদীতে বাস করা অথবা অজগর সাপের ছদ্মনাম বলেই জানে। বাংলাদেশে যে সকল সাপ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে ওটিই সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ।

আফ্রিকা উপমহাদেশ থেকে আসা ওই বিষধর সাপের উপদ্রব এখনই কমানো না গেলে পরে আরো মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ