রাজধানীর পলাশী বাজারে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের গণপিটুনির শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান এবং তার সহযোগী শহিদুল ইসলাম।
রবিবার (২ জুন) রাত ১১টার দিকে পলাশী বাজারের এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে আছেন তিনিসহ আরেক অভিযুক্ত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চাঁদাবাজিতে বাঁধা দেওয়ায় চাপাতি দিয়ে নজরুল এবং মাহবুব নামের দুই ব্যবসায়ীকে মারতে গেলে দোকানিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চকবাজার থানায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
দোকানিরা জানান, প্রায় প্রত্যেকদিন চাঁদাবাজি করতে আসে সলিমুল্লাহ হল ছাত্রলীগের এই সাবেক সভাপতি ও তার সহযোগী শহিদুল। এর আগে পলাশী বাজারের কলা বিক্রেতা দেলোয়ার থেকে এক হাজার টাকা এবং কনফেকশনারি দোকানের মালিক সানাউল্লাহ থেকে টাকা চাঁদা নেয়। এছাড়া প্রত্যেকদিন তারা এই বাজারে চাঁদাবাজি করে বলে গণমাধ্যমকে জানান একাধিক দোকান মালিক।
পলাশী দোকান মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, রাত ১১টার দিকে এসে এই ছাত্রলীগ নেতা আমাদের দোকানিদের থেকে চাঁদা দাবি করে। তাকে বাঁধা দিলে সে নজরুল নামে এক ব্যবসায়ী মারধর করে এবং চাপাতি দিয়ে কোপাতে যায়, পরে ওই ব্যবসায়ী পালিয়ে গেলে আমাকে চাপাতি দিয়ে মারতে আসে। আশেপাশে থাকা দোকানিরা আমাকে উদ্ধার করে এবং তাদের ধরে ফেলে। তারপর সবাই মিলে গণপিটুনি দেয়। পরে আমরা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে নিয়ে যায়।
আরেক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, চাঁদা চাইতে আসলে আমরা তাকে বাঁধা দিই। তাতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথম আমাকে ঘুসি মারে এবং পরবর্তীতে চাপাতি নিয়ে আসে কিন্তু আমি সরে যায়। তাদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। নিয়মিত অত্যাচার এবং চাঁদাবাজি করে তারা।
পলাশী বাজারের আরেক ব্যবসায়ী ইকবাল আহমেদ বলেন, এরা দুজন নিয়মিত চাঁদাবাজি করতে আসে বাজারে। আমরা ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারি না। আজকে মারতে আসলে আমরা সবাই ধরে তাদের গণপিটুনি দিই এবং পুলিশের হাতে তুলে দিই। আমরা এই চাঁদাবাজদের হাত থেকে মুক্তি চাই।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে সলিমুল্লাহ হল থেকে মাদক এবং নারীসহ আটক হন এই নেতা। সে সময় হল প্রশাসন তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দেয়। এর আগে ২০১৪ সালে সংগঠনের শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় ছাত্রলীগ। মদের বারে মারামারি করার কারণেই তাকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি। সে মাদক ব্যবসার জড়িত বলেও জানা যায় এবং কি মাদক মামলার আসামিও এই ছাত্রলীগ নেতা।