চাচাতো বোনের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করায় চাচার হাতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে ময়মনসিংহের সুতিয়া নদী থেকে উদ্ধার মৃত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভ। তার চাচা ইলিয়াসকে খুঁজছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত মে মাসে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে আপন চাচা ইলিয়াসের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন সৌরভ। তবে তার চাচা কোনভাবেই এই বিয়ে মেনে নেননি। বিভিন্ন সময় ইলিয়াস সৌরভের বাবা ইউসুফকে বিভিন্ন রকম হুমকি দেন। অবস্থা বেগতিক দেখে বিষয়টি পরিবারের অনেককেই জানিয়েছেন ইউসুফ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৌরভের এলাকা সম্পর্কিত দাদা লুৎফর রহমান বলেন, ‘ সৌরভের বাবা ইউসুফ কয়েক দিন আগে আমার কাছে পরামর্শ চায় কী করা যায়। ইউসুফ থানায় ইলিয়াসের নামে জিডি করবে কি না, এ পরামর্শও চায়। কিন্তু নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে জিডি করতে আমি নিরুৎসাহিত করি।’
তিনি আরও জানান, ‘এর মধ্যে ইলিয়াসের মেয়ে সৌরভের কাছ থেকে কানাডায় চলে গেছে বলে আমাকে জানায় ভাতিজা ইউসুফ। এ ঘটনা নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন ছিল সৌরভের বাবা। এ অবস্থায় শনিবার রাত ৯টার দিকে আমাকে ফোন করে জানায়, সৌরভ সন্ধ্যার দিকে বের হয়ে আর বাসায় ফিরে আসেনি। এখন তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে রোববার বিকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে জানানো হয় নিখোঁজ সৌরভের লাশ পাওয়া গেছে।’
নিহতের মা মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘আপন চাচাই আমার ছেলেকে খুন করেছে। আমি তার ফাঁসি চাই।’ বাবা ইউসুফ আলী বলেন, ‘শনিবার দুপুরে একটা ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায় সৌরভ। আমরা তো জানতাম না সে এখানে আসবে। জানলে তো আর আসতে দিতাম না।’
ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের ওসি ফারুক আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা অনেকাংশে নিশ্চিত যে পারিবারিক কারণে সৌরভকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা সৌরভের চাচা ইলিয়াসকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি। তিনি পলাতক রয়েছেন। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারব।’
এর আগে রোববার (২ জুন) সকালে ময়মনসিংহের সুতিয়া নদী থেকে উদ্ধার করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভের লাগেজবন্দি চার খণ্ড মরদেহ। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইগবাজ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামের।