Friday, November 22, 2024

‘জীবনযুদ্ধে আমি পরাজিত’ স্ট্যাটাস দিয়ে জীবন দিলেন শিক্ষক

আরও পড়ুন

এবার ‘মাইগ্রেনের কাছে হেরে গেলাম। জীবনযুদ্ধে আমি পরাজিত’, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমনই একটা স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মান্না দে (৩২)। বুধবার (২২ মে) সদর থানার চন্দ্র দিঘলিয়া ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা গেছে, শিক্ষক মান্না দে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার থানা পাড়া এলাকার বাবুল কুমার দের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ সেশনের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। এরপর কর্মজীবনে তিনি গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিকস টেকনোলজির ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টর পদে যোগ দেন।

গত মঙ্গলবার রাতে মান্না দে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি লেখেন, ‘প্রতিনিয়ত মস্তিষ্কের নিউরনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। মাইগ্রেন এক অভিশাপের নাম। মাইগ্রেনের কাছে হেরে গেলাম। জীবনযুদ্ধে আমি পরাজিত।’

এদিকে গোপালগঞ্জ সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, দরজা ভেঙে দিঘলিয়া ভাড়া বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা মান্না দের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আপাতত মনে হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  আলটিমেটামেও কাজে যোগ দেননি কিছু পুলিশ কর্মকর্তা

আরও পড়ুনঃ কুকুরের কাড়াকাড়িতে মিলল নিহত ৩ লাশের সন্ধান

এবার ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় নারী ও তার দুই সন্তানের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ মে) উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের মাঠ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখানে দুই শিশুর খণ্ডিত লাশ টানাটানি করছিল কুকুর এবং পাশের একটি গর্তে পুঁতে রাখা ছিল তাদের মায়ের লাশ।

এদিকে নিহতরা হলেন- উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের স্ত্রী আমেনা বেগম (৩০) ও তার দুই ছেলে আবু বক্কর (৪) ও আনাস (২)। বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে তাদের লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী পলাতক। পুলিশের ধারণা, স্ত্রী ও দুই শিশুপুত্রকে হত্যার পর পুঁতে রেখে সে পালিয়ে গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত আমেনা বেগম সাখুয়া ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে। ছয় বছর আগে আলী হোসেনের সঙ্গে তার ফুফাতো বোন আমেনার বিয়ে হয়। আমেনা অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন।

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনার বিষয়ে আপডেট জানালো ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আলী হোসেন কোনো কাজ করতেন না, ঘুরে বেড়াতেন। একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল সে। ঋণের কিস্তির জন্য প্রায় সময় আমেনাকে চাপ দিত। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গার্মেন্টসে যাওয়ার কথা বলে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিদায় নেন আমেনা। এরপর রাত থেকে দুই সন্তানসহ তার খোঁজ মিলছিল না।

মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলের ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূরে পার্শ্ববর্তী কাজিগ্রামের রাস্তার পাশে সোহরাব নামে ব্যক্তি শিশুর একটি হাত দেখেন। এ সময় আশপাশে কয়েকটি কুকুরও ঘুরতে দেখেন তিনি। পরে কাউকে কিছু না জানিয়েই সেখানে হাতটি মাটিচাপা দিয়ে চলে যান সোহরাব। দুপুরের দিকে মেহেদী ও সাব্বির নামে দুই যুবক নামাজ আদায়ের জন্য কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের হাইঞ্জা মড়লের বাড়ির দক্ষিণ পাশের মসজিদে যাওয়ার পথে তারা দুর্গন্ধ পান।

এ সময় তারা দেখেন, মসজিদের পশ্চিমে ধানক্ষেতের পাশে কিছু একটা নিয়ে কয়েকটি কুকুর টানাটানি করছে। এগিয়ে গিয়ে দেখেন, দুই স্থানে দুটি শিশুর লাশের খণ্ডিত অংশ পড়ে আছে। তারা একটু সামনে এগিয়ে দেখেন, পাশের একটি গর্তের মধ্যে থেকে এক নারীর হাত বের হয়ে আছে। তাদের ডাকাডাকিতে সেখানে লোকজন জড়ো হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ত্রিশাল থানার পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ  চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা রশিদ গ্রেফতার

বিকেলে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শামীম হোসেনসহ র‍্যাবের একটি দল। এরপর পুলিশ মাটি খুঁড়ে ওই নারী এবং আশপাশে ছড়িয়ে থাকা দুই শিশুর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। বিকেলে তিনটি লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে পরিচয় শনাক্তে আশপাশের এলাকায় তদন্ত শুরু করে। রাত ৯টার দিকে তাদের পরিচয় মেলে।

এদিকে ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে আমেনার স্বামী আলী হোসেন পলাতক। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী ও সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যার পর পুঁতে রাখে সে। এরপর শিয়াল-কুকুরে লাশ টেনে বের করে। আলী হোসেনকে আটকের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ