ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার গভীর রাতে এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলার পর নিজেদের পরবর্তী পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান (চিফ অব স্টাফ) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাগেরি। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মোহাম্মদ বাগেরি বলেন, ইসরায়েল যদি এ হামলার জবাব না দেয় তাহলে দেশটিতে আর হামলা পরিকল্পনা নেই ইরানের। ইসরায়েলের যেসব লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়েছে তার সবই পূরণ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের কোনো বেসামরিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তুতে ইরান হামলা চালায়নি। দেশটিতে হামলায় কেবল সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়েছে। হেরমন পর্বতে ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা ঘাঁটিতে হামলা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সশস্ত্র বাহিনীর এ কর্মকর্তা বলেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলার ঘটনায় ওই ঘাঁটি জড়িত। এ ছাড়া নেগেভ মরুভূমিতে ইসরায়েলের নেভাতিম বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘাাঁটি থেকেই ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালানো হয়।
তিনি আরও বলেন, ইরানের হামলায় ইসরায়েলের এ ঘাঁটি দুটিই উল্লেখযোগ্যভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সেগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। শনিবারের হামলার চেয়ে ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী হামলা চালাতে তেহরান সক্ষম বলেও দাবি করেন তিনি।
এর আগে রোববার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ইরানের দূত সায়্যিদ ইরাভানি হামলার কারণ ব্যাখ্য করে বলেন, স্বাভাবিকভাবেই সব দেশের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। ইরান এ হামলার মাধ্যমে সেই আত্মরক্ষার অধিকারই রক্ষা করেছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
হামলার ঘটনা উল্লেখ করে ইরাভানি আরও বলেন, তেহরানের পাল্টা জবাব দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। ইরান কোনো ধরনের উত্তেজনা বা যুদ্ধ চায় না। তবে যে কোনো হুমকি বা হামলার জবাবের কথা জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। মূলত চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলার জবাবে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই পাল্টা হামলা করে তেহরান। ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা। এমনকি দুই চিরশত্রু দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ পর্যন্ত বেধে যেতে পারে বলে সতর্ক করছেন তারা।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল ইরান।