গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিনশরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান। সেগুলোর বেশিরভাগ ইসরায়েল প্রতিহত করলেও অন্তত ৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের মাটিতে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে ইরানের একটি বার্তা সংস্থা।
ইরানি বার্তা সংস্থা ইরনা নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলই নিশ্চিত করেছে রেমন ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে দ্রুতগতির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ হামলার কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রেমন বিমানঘাঁটিতে খুব দ্রুতগতিতে আঘাত হানছে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। ওই সময় সেখানে আগুনের ফুলকিও দেখা যায়।
ইরানের আরেক বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ রুশ বার্তা সংস্থা স্পুটনিকের বরাতে জানিয়েছে, ইসরায়েলিরা স্বীকার করেছে, তাদের রেমন বিমানঘাঁটিতে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই রোববার রাতে ইসরায়েলজুড়ে ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
হামলার পরপর তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর শব্দ শোনা গেছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে।
শনিবার রাতের এই হামলাকে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নাম দিয়েছে ইরান। এ হামলাকে সীমিত ও নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি।
এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে দেশটি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান।