সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার ঘটনায় এমনভাবে জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান যে, তাতে ইরানের শত্রুদের ‘‘অনুশোচনা’’ করতে হবে। ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছেন, দামেস্কে বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাত কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় কঠোর জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে তেহরান। ইরানের শত্রুরা হত্যাকাণ্ডের জন্য আফসোস করবে।
সিরিয়ার রাজধানীতে সোমবারের বিমান হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান। ওই অঞ্চলে ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল হামলায় জড়িত বলে দাবি করেছে তারা। যদিও এই হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
ওই হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর দুই জেনারেলসহ ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সাত কর্মকর্তার প্রাণহানি ঘটে। কনস্যুলেট ভবন একেবারে ধ্বংস হয়ে যায়।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি বলেছেন, ‘‘ইরানের প্রতিক্রিয়া সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় নির্ভুলতা ও পরিকল্পনার সাথে শত্রুদের সর্বাধিক ক্ষতিসাধনের লক্ষ্যে জানানো হবে; যাতে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে তারা।’’
আইআরজিসির বিদেশে অভিযান পরিচালনাকারী শাখা আল-কুদস ফোর্সের নিহত দুই ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের একজন মোহাম্মদ রেজা জাহেদির স্মরণে দেশটির কেন্দ্রীয় শহর ইস্ফাহানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই হুমকি দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকারবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, ফিলিস্তিন, সিরিয়া এবং লেবাননে আল-কুদস ফোর্সের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছিলেন ৬৩ বছর বয়সী জাহেদি।
চার দশকেরও বেশি সময়ের কর্মজীবনে বেশ কয়েকটি কমান্ডের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ২০২০ সালে বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আল-কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সুলেইমানি নিহত হওয়ার পর থেকে তিনিই দেশটির এই বাহিনীর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্ফাহানে সমাবেশে উপস্থিত জনতা ‘‘ইসরায়েলকে ধ্বংস কর’’ এবং ‘‘যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস কর’’ স্লোগান দেন। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে ‘‘শাস্তি’’ দেওয়া হবে।
এর আগে, শুক্রবার আইআরজিসির প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইসরায়েল দামেস্কের হামলার ‘‘পরিণাম এড়াতে পারবে না।’’