সারাদেশে চলছে দব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। বিভিন্ন টানাপোড়নে দিন কাটাচ্ছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিভিন্ন দেশে রোজার মাসে নিত্য পণ্যের দাম কমালেও বাংলাদেশ তার বিপরীতে। যার প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়েছে। তাইতো শুধু নাম মাত্র ইফতার খেয়ে রোজা রাখছেন শিক্ষার্থীরা। এখন তাদের ইফতারে একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ছোলা-মুড়ি। আবার কিছু কিছু মেসে দেখা যায় ভাত খেয়েই ইফতার করছেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতেও তার ব্যতিক্রম নয়।
এদিকে মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা অনেকেই এক সঙ্গে বাজার করে ইফতার করেন আবার অনেকেই নিজেদের মতো কিনে ইফতার সারেন। অনেক সময় হলের শিক্ষার্থীরা খরচ কমাতে নিজেরাই ইফতার তৈরি করেন। তাদের ইফতারে থাকে না কোনো বাহারি পদ।
বুধবার (২০ মার্চ) ইফতারের আগ মুহূর্তে রাজশাহীতে বেশ কয়েকটি মেস ঘুরে ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা যায়।
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্র মেডিকেল বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হাবিবুল্লাহ। থাকেন নগরীর সালবাগান এলাকার মায়াময়ী মেসে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা মেসে থেকে যেভাবে ইফতার করি কোনোরকম খেয়ে বেঁচে থাকা হচ্ছে। ইফতারে সাধারণ মুড়ি মাখিয়ে খাইতে ১০০ টাকা লেগে যায়, তাও সাধ্যমত হয় না। দাম বেশি বলেই খাবারের পরিমাণ কম। সব জিনিসের দাম বেশি। আমরা ১৩ জন মিলে ৩টা বেগুনি, ৩টা পেঁয়াজু আর ১০০ গ্রাম জিলাপি দিয়ে ইফতার করি। আমাদের ইফতারে কিছুই ঠিকঠাক ভাবে চলে না।
তিনি আরও বলেন, কিছু খাবার কিনে খাওয়ার ইচ্ছা হলেও সাধ্য নাই। তরমুজের কথা তো বাদই দিলাম একজন শ্রমিকের সারাদিনের পরিশ্রমিকও কম একটা তরমুজের দামের কাছে। আর্থিক ইনকাম বাড়লে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা যাবে। আমার বাবা দিনমজুর আমার মেস খরচ, মিল খরচ ইফতার খরচ চালানো খুবই কষ্টকর।
কথা হয় রাজশাহীর বিনোদপুর মন্ডোলের মোড়ের মাস্টার আব্দুর রহিম ছাত্রাবাসের আব্দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী। প্রতিদিন এক সঙ্গে ১৫-১৮ জন ইফতারি করেন তারা। তিনি ঢাকা পোস্টেকে বলেন, মূল সমস্যা হচ্ছে বাজারে দ্রব্যের ঊর্ধ্ব মূল্য। বুন্দিয়া বাজার থেকে তৈরি খাবার কিনে নিয়ে আসতে গেলে আমাদের খরচ পড়ে ১৮০ টাকা কিন্তু মেসে তৈরি করলে খরচ পড়ে ১৬০ টাকা। আবার ছোলার ক্ষেত্রেও একই। না কিনে মেসে রান্না করলে অন্তত ২০-৪০ টাকা সেভ হয়। খেজুরের দাম অতি মাত্রায় বেশি যার জন্য সব সময়ই ২২০ টাকা কেজি মূল্যের খেজুর খাওয়া লাগে যার মান খুবই বাজে।
এই শিক্ষার্থী বলেন, বিনোদপুরে কলা বিক্রেতাদের কাছে নিজেদের অসহায় মনে হয়। একটা থেকে অন্যটা দেখতে দেয় না। দাম প্রতি পিস ৫-৮ টাকা যেটা রোজার আগে ছিল ৩-৬ টাকা।