সোমালিয়ার জলদস্যুদ কর্তৃক জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ’র নাবিকরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। শনিবার সারাদিন পরিবার-স্বজন, জাহাজ কর্তৃপক্ষ বা অন্য যে কারোর সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারেননি জিম্মি ২৩ নাবিকের কেউ।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ের পর থেকে জলদস্যুদের কবলে রয়েছে পাঁচদিন ধরে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার জলদস্যুদের নতুন দল জাহাজটির দায়িত্ব নিয়েছে এবং পুরোনো দল জাহাজ থেকে নেমে গেছে। নতুন দল দায়িত্ব নিয়ে নাবিকদের সঙ্গে তাদের পরিবারসহ সবার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার পর প্রতিদিন নাবিকদের কেউ কোনো না কোনোভাবে স্বজন কিংবা জাহাজ মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। কিন্তু আজ শনিবার দিনভর জিন্মি থাকা নাবিকদের কেউ জাহাজ মালিক কিংবা স্বজনদের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারেননি। এই প্রথম একটি দিন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রয়েছেন নাবিকরা।
ধারণা করা হচ্ছে, মালিক পক্ষের ওপর চাপ তৈরি করতেই এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেছে জলদস্যুরা। তবে আজও জলদস্যুরা মুক্তিপণ হিসেবে কোনো নির্দিষ্ট অংকের টাকা দাবি করেনি তারা।
ভারত মহাসাগরে মঙ্গলবার জাহাজটি জলদস্যুর কবলে পড়ার পর বৃহস্পতিবার সোমালিয়ার উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করেছিল। এরপর দস্যুদের আগের দল জাহাজ থেকে নেমে পড়ে। আরও ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১৫-২০ জনের নতুন আরেকটি দল জাহাজের দায়িত্ব বুঝে নেয়।
নোঙর তুলে শুক্রবার বিকেলে তারাই জাহাজটির অবস্থান পরিবর্তন করে। তাদের সঙ্গে আছেন ইংরেজি জানা একজন দোভাষী। শনিবার পর্যন্ত সোমালিয়ার জলদস্যুরা মুক্তিপণ দাবি করেনি। এ ব্যাপারে মালিকপেক্ষরও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেনি তারা। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগির তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে মুক্তিপণের প্রস্তাব পাঠাবে জলদস্যুরা।
এদিকে জাহাজটির আবার অবস্থান পরিবর্তনের খবর শুনে আতঙ্ক বেড়েছে জিম্মিদের পরিবারে। উৎকণ্ঠা নিয়ে স্বজনরা ঘটনার কারণ জানতে চাচ্ছেন জাহাজের মালিকপক্ষের কাছে।
জাহাজের মালিকপক্ষের মুখপাত্র ও কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার জলদস্যুদের নতুন আরেকটি দল জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এটি উপকূল থেকে চার নটিক্যাল মাইল দূরে গিয়ে নোঙর করায়। শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জাহাজটি অবস্থান পাল্টায়। জলদস্যুদের কেউ আমাদের সঙ্গে এখনও মুক্তিপণের ব্যাপারে যোগাযোগ করেনি। তবে নাবিকেরা সবাই ভালো আছেন।’