Friday, November 22, 2024

আনলিমিটেড মোবাইল ডাটা ৫০০ টাকায় আনার পরামর্শ

আরও পড়ুন

আনলিমিটেড মোবাইল ডাটা ৫০০ টাকায় আনার পরামর্শ
ঢাকা: ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মতো মোবাইল ডাটার দামও কমিয়ে আনা প্রয়োজন এবং ব্রডব্যান্ডের মতো আনলিমিটেড মাসিক মোবাইল ডাটার মূল্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার মধ্যে আনা উচিত বলে টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত একটি গোলটেবিল আলোচনায় অভিমত এসেছে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিটিআরসি ভবনে গোলটেবিল বৈঠকে দেশের ডিজিটাল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবাদানে সুলভে মানসম্মত টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত, সময়োপযোগী পলিসি প্রণয়ন, নিরবচ্ছিন্ন ও সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ, প্রান্তিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন, স্মার্টফোনের পেনিট্রেশন বৃদ্ধি, টেলিযোগাযোগ আইনের সময়োপযোগী সংস্কার এবং ডিজিটাল লিটারেসি ও ডিজিটাল সেবার বহুমাত্রিক ব্যবহারের লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মতামত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ-উল-বারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দায় চৌধুরীসহ টেলিযোগাযোগ খাতসংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান চালডালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিফ আলিম।

তিনি বলেন, ভারতে ই-কমার্স বাজার ৭৫ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশ ১.৩ বিলিয়ন এবং ইন্দোনেশিয়ার ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে ৬০ লাখ অনলাইন গ্রাহক রয়েছে, ভারতের ১৫ কোটি আর ইন্দোনেশিয়ার ৪ কোটি অনলাইন কাস্টমার রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  শিশুটি এখন কাউকে দেখলেই আঁতকে উঠে বলছে ‘আমাকে আর মারবেন না’

বিডিজবস ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, ব্রডব্যান্ডের মতো মোবাইল ডাটার দামও কমিয়ে আনা প্রয়োজন এবং ব্রডব্যান্ডের মতো আনলিমিটেড মাসিক মোবাইল ডাটা মূল্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার মধ্যে আনা উচিত। মোবাইল অপারেটর কর্তৃক কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনার সুযোগ দিলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাড়বে বলেও জানান তিনি।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এএইচএম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো বলেন, গ্রাহককে এসএসএম প্রদানের ক্ষেত্রে এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরগুলো একবছর মেয়াদি চুক্তিবদ্ধ হয়ে কম খরচে সাবস্ক্রিপশন সুবিধা দিতে পারে। যারা বেশি এসএমএস ব্যবহার করে তাদের জন্য ছাড় বেশি দেওয়া যেতে পারে।

রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ‘পাঠাও’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের জন্য ডাটা লোকালাইজেশন ও ডাটা প্রটেকশন আইন জরুরি।

দেশের ৬০ ভাগ ডিজিটাল কমার্স ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফেসবুকে প্রায় ৩ লাখের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ নারী। তাই একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে যাতে গ্রাহকের ডাটার সাথে কানেক্ট করা যায় সে ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ  হানিফ ফ্লাইওভারে চলন্ত ট্রাকে আগুন

বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, যদি শতকরা ১০ ভাগ ইন্টরনেট ব্যবহার বাড়ে তাহলে তা জিডিপিতে ১.৮ শতাংশ ভূমিকা রাখে।

ভয়েস সেবা থেকে আয় কমছে জানিয়ে তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটরদেরও ডিজিটাল সার্ভিস দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য ভার্টিকেল ইন্ট্রেগরেশন অব পলিসি করার ওপর তাগিদ দেন তিনি।

বিটিআরসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) ওয়াহিদুজ্জামান টেলিযোগাযোগ আইন সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশের বাজার এ মুহূর্তে এআই বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা নিতে সক্ষম নয়। ডাটা শেয়ার করার জন্য একটি ইউনিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির তাগিদ দেন তিনি।

বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়াতে বিটিআরসি কাজ করছে। এনইআইআর সিস্টেম চালু করতে কয়েকমাস সময় লাগবে।

আরও পড়ুনঃ  একাধিক পুরুষের সঙ্গে ভিডিও ভাইরাল, কে এই তরুণী?

তিনি বলেন, মোবাইল ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে অপারেটরদেরকে বিদম্যান স্পেকট্রাম যথাযথ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দেশে ডিজিটাল ডিভাইড কমে আসছে ধীরে ধীরে। টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য সরকার-একাডেমিয়া ও খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে একটা সহযোগিতা প্রয়োজন। আইসিটি বিভাগ ডিজিটাল সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ-উল-বারী বলেন, বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ আইনে মন্ত্রণালয় থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হয় বিধায় লাইসেন্স দিতে বিলম্ব হয়। সেক্ষেত্রে লাইসেন্স অথরিটি থাকা দরকার বিটিআরসির কাছে। পলিসি তৈরি করবে মন্ত্রণালয় এবং আইন তৈরি করবে সংসদ।

আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিউ) নিয়মানুযায়ী কোনো গ্রাহক তিনমাসে এক বার ডাটা ব্যবহার করলে তাকে ব্যবহারকারী ধরা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রাহকের ডাটা প্রটেকশন গুরুত্বপূর্ণ এজন্য একটা চলনসই আইন প্রয়োজন হবে।

গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান, কমিশনার, মহাপরিচালক এবং ডিজিটাল সেবাদানকারী প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের মতামত দেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ