বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দ্রুত দেশ ছাড়েন এবং ভারতে সাময়িকভাবে আশ্রয় নেন। দেশের একটি প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী- ৪৫ মিনিটের মধ্যে শাহবাগ থেকে গণভবনে আন্দোলনকারীরা চলে আসতে পারে বলে অনুমান করা হয়।
শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিবেচনায় ৪৫ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এই স্বল্প সময়ের কারণে দেশত্যাগের প্রস্তুতি নিতে পারেননি তিনি। বঙ্গভবন এসে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা একটি সামরিক হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি একটি প্রতিবেদনে জানায়, শেখ হাসিনা দুটি স্যুটকেস নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। এ ছাড়া আর কিছুই সঙ্গে আনতে পারেননি তিনি। ওই স্যুটকেসগুলোতে ছিল কিছু পোশাক ও জরুরি নথিপত্র।
শেখ হাসিনার সম্পত্তির পরিমাণ কত, সেই হিসাব-নিকাশও তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। চলতি বছরের ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনকে সম্পত্তির হিসাব দিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী- শেখ হাসিনার চার কোটি ৩৬ লাখ টাকার সম্পত্তি রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
নির্বাহী আদেশে এই সংসদ বিলুপ্ত করা হলো। এর আগে বেলা ৩টার মধ্যে সংসদ ভেঙে দেওয়ার আলটিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তার টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হলো। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।