প্রায় দুই বছর আগে সিনথিয়া ইসলাম খুসবুকে বিয়ে করেন আক্কাস আলী রনি (২৬)। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ চলছিল। মঙ্গলবার (১১ জুন) রাতে ফেনী পৌরসভার চর গণেশ এলাকার ভাড়া বাসায় বাজার আনা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে বুধবার (১২ জুন) ভোরে খুসবুকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন আক্কাস। পরে থানায় এসে নিজেই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা করেন। তাদের বাড়ি ভোলা জেলায়।
বুধবার সকালে সিনথিয়া ইসলাম খুশবুর মা লিপি আক্তার জানতে পারেন তার মেয়ে স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন। এদিন রাতেই ঢাকা থেকে তিনি ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানায় আসেন।
এ সময় কাঁদতে কাঁদতে লিপি বেগম বলেন, পরিবারের অমতে আক্কাসকে বিয়ে করে সিনথিয়া। পরে তাদেরকে আমরা ঢাকায় আসতে বলি। কিছুদিন ধরে আলী আক্কাস ব্যবসা করার জন্য সিনথিয়ার মাধ্যমে টাকা চাইতে থাকে। আমরা বলেছি, তোমরা ঢাকায় আসলে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু ঢাকায় না গিয়ে আক্কাস সিনথিয়াকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার পর সিনথিয়া আমাকে বারবার ফোন দিতে থাকে। ফোন ধরার পর সিনথিয়া জানায় যে আক্কাস তাকে টাকার জন্য প্রচণ্ড মারধর করছে। এরপর রাত সাড়ে তিনটার দিকে মেয়ে আবারও ফোন দিয়ে বলে, `মা, আমার ফোন বন্ধ থাকলে বুঝবা, তোমাদের জামাই আমারে মেরে ফেলেছে।’ আর সকাল হতে না হতেই থানা-পুলিশ মুঠোফোনে জানায়, আমার মেয়েকে আক্কাস জবাই করে হত্যা করেছে।
বুধবার রাতেই সিনথিয়ার মা বাদী হয়ে আলী আক্কাসকে আসামি করে রাতেই থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফনের জন্য ঢাকায় নিয়ে যায় সিনথিয়ার পরিবার।
সিনথিয়ার মুঠোফোন থেকে উদ্ধার হওয়া কাবিন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর ১ লাখ টাকা দেনমোহরে ফেরিওয়ালা আলী আক্কাসকে বিয়ে করেন সিনথিয়া। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্কাসের কাছে চলে আসার পর মা লিপি বেগমকে জানান তারা বিয়ে করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শৈবাল বড়ুয়া বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনথিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আলী আক্কাসকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আশিকুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে আক্কাস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়।