Friday, November 22, 2024

উপজেলায়ও ‘বর্জন’ কৌশলে বিএনপি

আরও পড়ুন

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপি ইতোমধ্যে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তবে দলটি শুধু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, কর্মসূচি নিয়েও মাঠে নামবে। এ ক্ষেত্রে বিগত জাতীয় নির্বাচনের মতো একই কৌশল অবলম্বন করবে বিএনপি। নিজেরা দলগতভাবে ভোট বর্জনের পাশাপাশি জনগণকেও ভোট বর্জনের আহ্বান জানাবে। আর ভোট বর্জনের এ আহ্বানকে একটি ক্যাম্পেইনে রূপ দিতে চায় তারা। ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে জনগণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেখানে পথসভা, হাটসভাসহ সাংগঠনিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জনগণকে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করবে। গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডকে ভার্চুয়ালি এমন প্রস্তাবনা দিয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচন নিয়ে করণীয় বিষয়ে গত কয়েকদিনে দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল বিভিন্ন স্তরের অন্তত দুইশ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের পরামর্শ নেন হাইকমান্ড। সেখানেও তারা অনুরূপ পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মী বহিষ্কার

বিএনপি মনে করে, দশ বছর ধরে দেশবাসীর মধ্যে এমনিতেই নির্বাচনকেন্দ্রিক ভোট বিমুখতা রয়েছে। দলটির দাবি, তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জন করেছে। উপজেলা নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কালবেলাকে বলেন, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের জন্য আমরা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করব। এজন্য প্রচারপত্র বিলি, সভা-সমাবেশ ইত্যাদি মাধ্যম ব্যবহার করে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানাব।

এদিকে, উপজেলা পরিষদের প্রথম দফার নির্বাচনে যারা দলীয় পদে থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোটে অংশ নিলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও প্রার্থীদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। জেলা নেতৃবৃন্দ এবং সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমে দলের পদধারী ও সাবেক নেতাদের ইতোমধ্যে কেন্দ্রের এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কালবেলাকে বলেন, দলের পদধারী ও সাবেক যেসব নেতা প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনের কী পরিণতি হয়, সেটা তাদের বুঝিয়ে বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, বাকিরাও যথাসময়ে প্রত্যাহার করবেন, নির্বাচনে বিএনপির কেউ থাকবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা উপজেলায় প্রথম ধাপে প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করব। তারপরও কেউ ভোটে থাকলে দল তখন তাদের ব্যাপারে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেবে।

আরও পড়ুনঃ  বিএনপি নেতা হাবিব জামিনে মুক্ত

বিএনপির এক সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামলে দলের প্রার্থীদেরও নির্বাচন থেকে বিরত রাখা যাবে।

জানা গেছে, ২২ এপ্রিলের পর থেকে বিএনপির জনগণকে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করার এই ক্যাম্পেইন শুরু হতে পারে। সেখানে ভোট বর্জনের কারণগুলো লিখিত ও মৌখিকভাবে জনগণের কাছে তুলে ধরবে দলটি। আর লিফলেটে ওই বিষয়টি ছাড়াও একদফা দাবি এবং সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টিও তুলে ধরা হবে।

আরও পড়ুনঃ  বাতিল হতে পারে ৯টা থেকে ৫টার অফিস সময়

সাংগঠনিক সম্পাদকদের ভার্চুয়াল বৈঠকেও সারা দেশে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। সাংগঠনিক সম্পাদকরা দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এখন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শুরু করা দরকার বলে অভিমত দেন। এর অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে সারা দেশে জেলা প্রতিনিধি সভা কিংবা বর্ধিত সভার প্রস্তাব দেন তারা। তাদের পরামর্শ, যেসব এলাকায় উপজেলা নির্বাচন থাকবে, সেগুলো বাদ দিয়ে অন্য জেলায় এসব প্রতিনিধি সভা করা যেতে পারে।

বৈঠকে জনস্বার্থ ইস্যু এবং নতুন নির্বাচন দাবিতে কোনো কর্মসূচি দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়। ঢাকায় একটি সমাবেশের প্রস্তাব এলেও এই মুহূর্তে তীব্র তাপদাহের কারণে তার বিরোধিতাও করেন অনেকে। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তখন কর্মসূচির ব্যাপারে চিন্তাভাবনার পরামর্শ দেন তারা।

জানা গেছে, আগামীতে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের আরও বৈঠক হবে। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, সাংগঠনিক সম্পাদকদের এসব প্রস্তাবনা নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা সাপেক্ষে শিগগির সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ