প্রেমিকাকে দায়ী করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ঘরের আড়ায় ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন প্রদীপ কুমার মণ্ডল (২৫) নামে এক স্বেচ্ছাসেবী যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা মুন্সিগঞ্জের সুন্দরবন উপকূলের জেলেপাড়ায়।
জানা গেছে, স্থানীয় জেলে পাড়ার বাসুদেব মণ্ডল ও যমুনা মণ্ডলের ছেলে প্রদীপ উপকূলীয় এলাকার সব দুর্যোগে মানুষ উদ্ধার করা, মানুষের কাছে খাবার পানি পৌঁছে দেয়াসহ বিভিন্ন কারণে অনেক জনপ্রিয় ছিল।
শ্যামনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আত্মহননে প্রাণ হারানো প্রদীপ মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের জেলেখালী এলাকার বাসিন্দা।
প্রদীপের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপমৃত্যুর মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নিপা চক্রবর্তী বলেন, প্রদীপের বংশীপুরের একটা মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার ওপরে অভিমান করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। প্রদীপ স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিডিও’র পরিচালক গাজী ইমরান বলেন, প্রদীপের মৃত্যুর এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে প্রদীপ কুমার লেখেন- ‘বিদায় পাখি। তুমি যে এইভাবে আমার সঙ্গে বেঈমানি করবে আমি কখনো বুঝিনি। আর কখনোই তোমাকে বিরক্ত করব না। কিন্তু একটা কথা বলব পাখি আমাকে যেভাবে ঠকালে এইভাবে অন্য কোনো মায়ের কোল খালি করো না।
প্লিজ। আর কখনোই তোমার জন্য পাগলামি করবে না কেউ। ভালো থেকো পাখি। আবার যে নতুন মানুষটার সঙ্গে কথা বলছো তাকে যেন কাঁদিও না। আজ আমি নিজে চোখে দেখলাম কথা বলতে। আর তোমার দেওয়া জামা প্যান্ট জুতা সব সঙ্গে নিয়ে মরলাম পাখি। আমি আমার কথা রেখেছি।
পাখি গত ২ বছর আগে বলেছিলাম না পাখি তুমি যেদিন আমাকে ভুলে যাবে সেই দিনই আমার মরণ হবে। রেখেছি পাখি আমার কথা। আমি তোমার মতো বেঈমান না। আর আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র তুমি এবং তোমার পরিবার দায়ী।’
মৃত্যুর পর প্রদীপের ফেসবুক পোস্ট কিছুক্ষণের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঝড় তোলে। তার মৃত্যুর পর অনেকেই সেই পোস্টে শোক ও সমবেদনা জানান।