স্টাফ করেসপনডেন্ট, যশোর:
যশোরের মনিরামপুরে পরীক্ষার হলে নকল নিয়ে ধরা পড়ার পর বাড়ি ফিরে লজ্জায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কলেজছাত্রী। শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই ছাত্রীর নাম সাবিনা খাতুন (১৭)। সে বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে। মৃত্যুর আগে একটি চিরকুটে মৃত্যুর কারণ লিখে গেছে সাবিনা। সাবিনা উপজেলার গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের মাধ্যমে কলেজে তার নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, সকালে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সাবিনার কাছে থাকা বাইরে থেকে লিখে নিয়ে যাওয়া কাগজ পরীক্ষার কক্ষের শিক্ষক দেখে ফেলেন। পরে দেড় ঘণ্টা খাতা আটকে রাখা হয়। এ কারণে সে পরীক্ষা দিতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, কলেজ থেকে বাড়ি এসে একটি কাগজে সব ঘটনা লেখে সাবিনা। তারপর ঘরের দরজা আটকে গলায় ফাঁস দেয় সে। কিছুক্ষণ পর মেয়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে চিৎকার দেন সাবিনার মা। তখন আশপাশের লোকজন এসে সাবিনার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন।
সাবিনা চিরকুটে লেখেন,’ আমার কিছু মনে থাকে না বলে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আগে আমি অল্প একটু কাগজে তথ্য লিখে পড়তে পড়তে কক্ষে যাই। পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় তা ফেলে দিতে মনে ছিল না। পরীক্ষার মধ্যে কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক তা দেখে ফেলেন। তিনি খাতা নিয়ে দেড় ঘণ্টা আটকে রাখেন। আমি তার কাছে ভুল স্বীকার করেছি। তারপরও তাসলিমা ম্যাডাম ও ইসমাইল স্যার আমাকে পরীক্ষা দিতে দিল না। তাড়িয়ে দিলেন।আমি লজ্জায় মুখ দেখাতে না পেরে দুনিয়া থেকে বিধায় নিচ্ছি। ভুলত্রুটি মাফ করে দিও। আমার কাছে ফারহানা ২৫ টাকা ও সুবর্ণা ৫ টাকা পাবে। তোমরা দিয়ে দিও।’
এ বিষয়ে গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম জানান, ঘটনা জানার পর তিনি শিক্ষক ও কমিটিকে নিয়ে জরুরি সভায় বসেছেন। কলেজের শিক্ষক তাসলিমা খাতুন ও ইসমাইল হোসেন কক্ষে দায়িত্বে ছিলেন। তাদের সাথে কথা বলছেন তিনি। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে বলবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মনিরামপুর থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।