বয়সের ভারে বেঁকে গেছেন সুফিয়া খাতুন। শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তি তিনি। অবিশ্বাস্য মনে হলেও তার বয়স এখন ১৩০। আরও অবিশ্বাস্য ব্যাপার এই যে, এই বয়সেও তিনি সব রোজা রাখছেন, পড়ছেন ৫ ওয়াক্ত নামাজ।
সুফিয়া খাতুনের জন্ম মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের পানাম গ্রামে। ৮ মেয়ে ও ২ ছেলেকে রেখে ৬১ বছর আগে মারা গেছেন স্বামী মো. আলতাজুদ্দিন তালুকদার। বর্তমানে শতাধিক নাতি-নাতনি আর স্বজনদের স্নেহ-ভালোবাসায় জীবনের শেষ দিনগুলো ভালোভাবেই পার করছেন সুফিয়া খাতুন। খুব একটা অসুখও নেই তার।
সুফিয়া খাতুনের দুই ছেলের মধ্যে একজনের বয়স ৯০। আট মেয়ের মধ্যে বর্তমানে জীবিত আছে ৫ জন। আছেন ৮৫ বছরের এক মেয়েও। ৬ মেয়ে জামাইও চলে গেছেন পরপারে। কিন্তু এখনো দিব্যি হাঁটাচলা করেন সুফিয়া। ফজরের সময় তিনিই বাড়ির সবাইকে ডেকে তোলেন। নিজের গোসল, খাওয়া-দাওয়া নিজেই করেন।
বড় কোনো সমস্যা না থাকলেও শরীরে ব্যথা আছে সুফিয়া খাতুনের। কানেও কম শোনেন। কিন্তু এসব কিছুকে পাত্তা না দিয়েই মধ্যরাতে উঠে পড়েন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে। রমজানে তারাবির নামাজও পড়ছেন তিনি। দিন-রাতের প্রায় পুরোটা সময় তসবিহ হাতে আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকেন।
সুফিয়া খাতুনের ছেলে মো. হোসেন তালুকদার বলেন, মা নিজেই ঘুম থেকে ওঠে, ওজু করে ও নামাজ পড়েন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই আদায় করেন তিনি। মা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন ও রোজা রাখেন।
সুফিয়া খাতুন বলেন, আমার খাবার তালিকায় দুধ ও ভাত থাকে। বউদের যেভাবে বলি আমাকে সেভাবেই যত্ন নেয়। আমার পাঁচটা তসবিহ। ছেলেদের দুটি দিয়ে দিলেও আমার কাছে তিনটি রেখেছি। ছোটবেলা থেকেই তিনি রোজা রাখেন।
দেশের অন্যতম প্রবীণ সুফিয়া খাতুনের কোনো অভিযোগ নেই। তবে পরিবারের সদস্যরা জানালেন, সরকারের বয়স্কভাতা থেকে বঞ্চিত সবচেয়ে বয়স্ক এই মানুষটি।