বিএনপি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই দ্বারা পরিচালিত বলে দাবি করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সভাপতি, লেখক, সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবির।
বুধবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রংপুর আয়োজিত ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াতের কারণে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় না। কেননা হাইকোর্টের কারণে জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাছাড়া বিএনপি পাকিস্তানের আইএসআই দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীরাও বলছে পাকিস্তানের আইএসআই-এর অর্থায়নে বিএনপি-জামায়াত পরিচালিত হচ্ছে। এ দেশ পরিচালিত হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বলেন, যারা ইতিহাস মানে না, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা এরকম আইন করার জন্য আইন কমিশনে লিখেছি। এ আইন বাস্তবায়ন হলে অন্তত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ করা যাবে।
শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, যারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান বানাতে চায় তাদের জায়গা বাংলাদেশে হবে না। বিএনপির এক নেতা বলে পাকিস্তান আমল ভালো ছিল, খালেদা জিয়াও মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের সংখ্যা মানেন না। তাহলে তারা কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তাই আমাদের বক্তব্য আপনারা যারা বাংলাদেশকে মানেন না, তারা পাকিস্তান-আফগানিস্তান চলে যান।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে হবে। কিন্তু আমরা তা থেকে অনেক দূরে। এখানে নাগরিক সমাজের একটা বড় দায়িত্ব রয়েছে। আমরা মৌলবাদীর বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু করেছি, তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।
সারাদেশে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে মডেল মসজিদ নির্মাণকে সংবিধান পরিপন্থী দাবি করেন শাহরিয়ার কবির। বলেন, ‘মডেল মসজিদ নিয়ে একমাত্র নির্মূল কমিটি প্রতিবাদ করেছে। বাংলাদেশের কোনো সংগঠনের কোনো সাহস হয়নি এ প্রসঙ্গ তোলার।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বলেন, ৫৬০টা মডেল মসজিদ বানাচ্ছে সরকার, কাদের টাকা দিয়ে? আমাদের জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এগুলো বানানো হচ্ছে। এটা সংবিধান পরিপন্থী আমরা বলেছি। সংবিধানের ৭ এর ক ধারায় পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে- রাষ্ট্র কোন বিশেষ ধর্মকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে না। আপনি যদি ৫৬০টা মডেল মসজিদ বানান, কেন আপনি ৫৬টা মন্দির প্যাগোডা গির্জা বানাবেন না। আর তাই যদি করতে হয় তাহলে সমস্ত অর্থ সেখানে আপনি ব্যয় করুন।’
সম্প্রীতির বাংলাদেশ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশিয়ার গণসম্মীলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাষা সৈনিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আফজাল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট রংপুর জেলা শাখার সভাপতি বিপ্লব প্রসাদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠক ডা. মফিজুল ইসলাম মন্টু।