Friday, November 22, 2024

অনলাইনে ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই পরীক্ষা, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

আরও পড়ুন

নতুন কারিকুলামে আজ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ১০ থেকে ৩টা পর্যন্ত স্কুলগুলো স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নিয়েছে । তবে আজকের চার শ্রেণির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র গতকাল রাতেই ফাঁস হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠে। পরীক্ষা শেষে সেই গুঞ্জন সত্যি হয়েছে। গতকাল রাতে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে আজকে হওয়া পরীক্ষার প্রশ্ন হুবহু মিল পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

অভিভাবকরা নতুন কারিকুলামের এই পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, ‘যেভাবে আজকের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, এতে সন্তানরা নতুন কিছু শেখার বদলে নকল করা শিখবে। পরীক্ষার আগের দিন রাতেই ফেসবুকে প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ে। অনেক শিক্ষার্থী সেই প্রশ্ন পড়েই পরীক্ষা দিয়েছে। সন্তানেরা পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে আমাদের নানান প্রশ্ন করেছে। এইভাবে চলতে থাকলে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হতে সময় লাগবে না।’

আরও পড়ুনঃ  ‘হয় কোটা বাতিল করুন, না হয় শতভাগ করে দিন’

ঢাকার নামকরা একটি প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়ণরত শিক্ষার্থীর মা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গতকাল রাত ১০টার দিকে আমার মেয়ে পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়েছে। শুরুতে দ্বিধায় ছিলো, এই প্রশ্ন হয়তো বানানো হয়েছে। মূল পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে হয়তো মিলবে না। কিন্তু আজ পরীক্ষায় প্রশ্ন পেয়ে দেখে গতকাল ফেসবুকে পাওয়া প্রশ্নের সঙ্গে আজকের প্রশ্ন হুবহু মিল। তার মতো নাকি অনেকেই রাতে প্রশ্ন পেয়েছে। এই যদি নতুন কারিকুলামের পরীক্ষা পদ্ধতি হয় তাহলে আমার সন্তান কী শিখবে? তারা তো নতুন কিছু শেখার বদলে চুরি/নকল করা শিখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রশ্ন দেখার পর আমি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে জানিয়েছে এইভাবে পরীক্ষা হলে সন্তারদের ভবিষ্যৎতের কী হবে। শিক্ষকরাও বিষয়টি নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন।’

এদিকে নতুন কারিকুলাম হওয়ার পরেই স্যোশাল মিডিয়ায় ‘ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষার প্রশ্নসহ সমাধান’ পাওয়া সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি পেজ ও গ্রুপের দেখা গেছে। যেসব পেজ ও গ্রুপেই এই প্রশ্নগুলো দেওয়া হয়েছে। এমনকি সমাধান দেওয়া হয়েছে। মূলত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এসব পেজে গিয়ে প্রশ্ন পেয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও আগামী দিনের পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান চেয়ে শিক্ষার্থীরা কমেন্ট করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  জুনিয়র সাকিব খানের পুরুষাঙ্গ কাটলেন স্ত্রী

এ বিষয়ে এক পরীক্ষার্থী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি প্রশ্ন দেখে প্রথম দিকে কিছুই বুঝিনি। পরে শিক্ষকরা আমাকে ঝুঝিয়ে দিয়েছেন। কারণ আমি আগের রাতে ফেসবুকে যায়নি। তবে আমার অনেক সহপাঠী আগের রাতেই প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। তুলনামূলকভাবে তারা আমার থেকে ভালো করবে। এজন্য আগামী দিনে আমাকেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। নয়তো আমি পিছিয়ে পড়বো।’

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা ও দিনাজপুরের কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের অনেক কিছু শেখার আছে। তবে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে হবে। পাশাপাশি এনসিটিবি যদি আগেই পরীক্ষা প্রশ্ন সম্পর্কে আমাদের ধারণা দিতো তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদের জানাতে পারতাম। এখন খাতা মূল্যায়ন করে বোঝা যাবে শিক্ষার্থীরা আসলে কতটুকু আয়ত্ত্ব করতে পেরেছে। তবে প্রশ্নফাঁস রোধ করাটা খুবই কঠিন হবে। কারণ শহরের স্কুলগুলোতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকলেও গ্রামের স্কুলগুলোতে তা নেই।’

আরও পড়ুনঃ  প্রাণপণ চেষ্টা করেও বাঁচতে পারলেন না ইমাম, মৃত্যু হলো ঈদের দিনই

জানা গেছে, আজ বুধবার ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা, সপ্তম শ্রেণির ধর্ম, অষ্টম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা এবং নবম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষায় লিখিত অংশের মূল্যায়ন ৬৫ ও দলীয় কার্যক্রমভিত্তিক অংশের মূল্যায়ন হবে ৩৫ মার্কে। এই ১০০ মার্কের মূল্যায়ন পাঁচ ঘণ্টায় শেষ করতে হয় শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠাপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামানের সঙ্গে একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ