অর্ডারের পর খাবারের জন্য বসতে বলায় এক ফাস্টফুড দোকানের কর্মচারীকে দলবল নিয়ে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। মার খেয়ে ওই কর্মচারী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বলে জানা গেছে।
রোববার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর পলাশী এলাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির রোডের ২২/৫ নম্বর দোকানের (ফাস্টফুড ও জুস) কর্মচারী খাইরুল মোল্লা খাদেমের (২১) সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি নূর উদ্দিন আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। জানা গেছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী দোকান কর্মচারী খাইরুল মোল্লা খাদেম কালবেলাকে বলেন, চারটা বার্গার খাওয়ার পর আরও খাবার অর্ডার করলে আমি বলি, ভাই দিচ্ছি, একটু বসেন। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে নূর উদ্দিন ও তার বন্ধুরা গিয়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারে। এরপর সবাই মিলে রাস্তায় নিয়ে আমাকে অনেক মারধর করে। আমি একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমি আমার মাথায়, ঘাড়ে ও পিঠে আঘাত পেয়েছি। হাতের চামড়া উঠে গেছে এবং মুখ নিচের দিকে ঠেসে ধরে মারায় চোখে বালুকণা গিয়ে ভরে গেছে। আর তারা খাবার খেয়ে বিলটাও দিয়ে যায়নি।
ফাস্টফুড দোকান মালিক মনির বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের নেতা নূর উদ্দিনসহ কয়েকজন বার্গার খাওয়ার পর আরও খাবার অর্ডার করে। তখন আমার দোকানের কর্মচারী বলে যে, ভাই একটু বসেন। রেডি করতে একটু সময় লাগবে। বসেন বলাতেই সে রেগে গিয়ে তাকে চড়থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। ভেতরের অন্যান্য কর্মচারীরা অনুরোধ করে দোকানের বাইরে নিয়ে আসে নূর উদ্দিনকে।
তিনি আরও বলেন, এরপর আবার হল থেকে ১০-১৫ জন নিয়ে আসে। তখন আমি দোকানে এসে তাদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করি। তারপরও আমার সামনে থেকে নিয়ে আমার কর্মচারীকে রাস্তায় ফেলে আবারও বেধড়ক মারধর করে তারা। তখন সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নূর উদ্দিন আহমেদ কালবেলাকে বলেন, বার্গারের দোকানের ওই কর্মচারী আমার সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। একবার বার্গার খেয়ে আবার অর্ডার করার পর তা দিতে দেরি করছিল। পরে আমি দুবার জিজ্ঞেস করেছি যে, কখন হবে। সর্বশেষ যখন জিজ্ঞেস করি তখন সে উত্তেজিত হয়ে আমাকে বসতে বলে। এ জন্য আমার রাগ হওয়ায় তার সঙ্গে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়েছে। এরপর দোকানের মালিক এসে আমাদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছে, পরে আমরা চলে এসেছি।