ঘরে-বাইরে চারপাশে অথৈ পানি। এরইমাঝে ৪ সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে ঘরের মধ্যে বাঁশের মাচায় দিন কাটছে একটি পরিবারের। কোরবানির ঈদ গেলো, অথচ, এক টুকরো মাংসও জোটেনি তাদের মুখে। ঠিকঠাক ডাল-ভাতও জুটছে না কপালে। এমন মানবেতর জীবন পার করছে সুনামগঞ্জের হাজারো বানভাসি পরিবার।
গেল সাত দিন ধরে এভাবেই বাঁশের মাচায় পুরো পরিবার নিয়ে বসবাস শান্তিগঞ্জের নোয়াগাঁওয়ের কৃষক মোহন মিয়ার। বন্যায় কাজ হারিয়ে ঘরের সাথে ভাসছেন তিনি অথৈই জলে।
কোরবানির ঈদের রাতেই নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডুবে যায় মোহন মিয়ার বসতঘর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবকিছু তলিয়ে যায় কোমর পানিতে। বাধ্য হয়ে মাচার ওপর, দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে মানবেতর দিন কাটছে মোহন মিয়া-পরিজান বেগম দম্পতির।
পরদিন ঈদ হলেও সুনামগঞ্জের হাজারো মানুষের মতো মোহন মিয়ার পরিবারের ভাগ্যে জোটেনি সেই আনন্দ।সন্তানদের মুখে তুলে দিতে পারেননি এক টুকরো মাংস। বন্যায় ঈদকেই যেন কোরবানি দিলেন মোহন মিয়া।
চারপাশে অথৈই পানি কেড়ে নিয়েছে মোহন মিয়ার রুটি রুজি। কাজ বন্ধ হওয়ায় টান পড়েছে সংসারের হাড়িতে। সকাল গিয়ে বিকেল গড়ালেও; একমুঠো চালের অভাবে, চুলা জ্বলেনি স্ত্রী পরিজন বেগমের। বন্যার কাদা পানিতেই আটকে গেছে জীবন।
শুধু মোহন মিয়া নয়, হাওরে এমন বন্দিদশায় আছেন অসংখ্য পরিবার। যাদের কাছে এখনো পৌঁছায়নি সরকারের সহায়তা। এ মানুষগুলোর চাওয়া সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি একটি টেকসই উন্নয়ন। যাতে এমন জলে ভাসা জীবনের।