Friday, November 22, 2024

এমপি আনারের মরদেহের ক্লু পেতে স্যুয়ারেজ লাইন ভাঙার অনুরোধ ডিবির

আরও পড়ুন

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা রহস্য উন্মোচনে এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থান করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তদন্তকারী দল, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শাখার প্রধান হারুন অর রশীদ।

শনিবার (২৫ মে) কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়েই নিউ টাউন থানার তদন্ত কর্মকর্তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় ডিবির তদন্তকারী দলটি। তিন দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির সঙ্গে যৌথভাবে হত্যাকাণ্ডের জট খুলতে কাজ করছেন তারা; হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারকারীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন একের পর এক জায়গায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আনারের মরদেহের টিকিটাও হাতে লাগেনি তদন্তকারীদের। সবশেষ দায় স্বীকারকারী এমনও তথ্য দিয়েছেন যে, বাংলাদেশি সংসদ সদস্যের মরদেহ থেকে মাংস আলাদা করে কিমা করার পর ফ্ল্যাশ করে দেওয়া হয়েছে টয়লেটে। সেই সূত্র ধরেই এবার মরদেহের ক্লু পাওয়ার আশায় এমপি আনার যে বাসায় ঢুকেছিলেন, তার স্যুয়ারেজ লাইন ভাঙার অনুরোধ জানিয়েছে ডিবির তদন্তকারী দল।

আরও পড়ুনঃ  দেশের চার জেলায় বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস

মঙ্গলবার (২৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলকাতার নিউটাউনে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে এ তথ্য দেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ।

ডিবিপ্রধান বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি এবং তদন্তকারী কর্মকর্তারা খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। প্রথমে তারা যে খালটির কথা বলেছিলেন, সেখানে বেশ কিছুদিন ধরে সার্চ করেছেন। আজও সার্চ করছেন এবং তারা কাজ করছেন। পাশাপাশি, আমরাও তাদের সঙ্গে আছি। আমরা কিছু অনুরোধ করেছি। সঞ্জীবা গার্ডেনসের পাশে একটি হাতিশালা লেক রয়েছে। আমরা অনুরোধ করেছি, এটা যেন সার্চ করা হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা আরেকটি অনুরোধ করেছি। যে বাসায় আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য ঢুকেছিলেন, সেটি যেন সার্চ করা হয়। সেখানে যে তিনটি কমোড রয়েছে, সেগুলো ফ্ল্যাশ করলে ময়লা যেখানে জমা হয় এবং যে স্যুয়ারেজ লাইন, সেটি ভাঙতে বলেছি। আশা করি, ওনারা এই কাজগুলো আজই করবেন। এছাড়া, হাতিশালা ব্রিজের কাছে যে খালটা, সেটিও সার্চ করতে অনুরোধ করেছি আমরা।

আরও পড়ুনঃ  ছেলের চিৎকার শুনে বাঁচাতে গেলেন বাবা, করুণ মৃত্যু হলো দুজনেরই

তদন্তের স্বার্থে এখনই সবকিছু জানানো সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, সিআইডি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে মরদেহের অংশগুলো খুঁজে বের করতে চেষ্টা করছে। এখন আপনারা যেটা বলছেন, মরদেহ না পাওয়া গেলে কি মামলা নিষ্পত্তি হবে না? উত্তর হচ্ছে, না। দেখেন, ভারত মহাসাগরে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল ২২৭ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু নিয়ে। তারা তিন বছর যাবৎ ৪৬ হাজার বর্গমাইল এলাকা সার্চ করেছে। তারপরও কিন্তু পায়নি। এটার অর্থ হলো, যদি মরদেহ পাওয়া না যায়, তাহলে স্বীকৃত হবে না। এটার কোনো সমাধান হবে না।

আরও পড়ুনঃ  সেই নাফিজকে নিয়ে আবেগঘন পোস্ট, যে শপথ নিলেন উপদেষ্টা আসিফ

হারুন বলেন, আমি জানি, সিআইডি প্রত্যেকটা বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিবেচনা করে কাজ করছে। এবং আমাদের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের যে মূল ঘাতক রয়েছে, সেও কিন্তু অনেক তথ্য দিয়েছে। পাশাপাশি, যে মেয়েটা ছিল, সেও আমাদের কিছু তথ্য দিয়েছে। এই তথ্যগুলো নিয়েই আমরা বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় এসেছি। কলকাতায় এসে ওই আসামির সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তথ্য মিলিয়ে দেখেছি। তারপরে ওই আসামিকে আমরা ঘটনাস্থলে নিয়ে গেছি। সেখানে গিয়েও আমরা যে তথ্যগুলো নিয়ে এসেছিলাম, তার হুবহু মিল পেয়েছি।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, আসামিদের বিভিন্ন বিষয়গুলো তদন্তকারী কর্মকর্তা আমলে নেবেন। তারপর আদালতে প্রেরণ করলে মাননীয় আদালত সেটি আমলে নেবেন। সব কিছু মিলিয়ে এই লোমহর্ষক হত্যকাণ্ডের বিচার খুব কষ্টকর হবে বলে আমি মনে করি না।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ