দেশজুড়ে বইছে তাপদাহ। গত ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে এবারের গরম। মাসজুড়ে চলমান তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, যা অব্যাহত থাকবে মাসের বাকি দুইদিনও। এরই মধ্যে গতকাল একদিনেই হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও একদিনে এত মৃত্যু হয়নি হিটস্ট্রোকে। তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে কী করণীয়? এ বিষয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন দেশের জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, গরমে আমাদের চরম অবস্থা চলছে। মানুষ তো বটেই পশু-পাখি, ফল ও ফসল সব কিছুই অত্যন্ত বিপদের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত সংবাদ শুনতে পাচ্ছি মানুষ হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। একজন মুসলিম হিসেবে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের কিছু করণীয় থাকে। জাগতিক যে করণীয়গুলো আছে আমরা সেগুলো তো করবোই। এর বাইরে ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে যে করণীয়গুলো আছে তার মধ্য থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় হলো এ ধরনের কষ্টে জাহান্নামের আজাব সম্পর্কে ধারণা নেয়া।
আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, তোমরা যে গরমের দাবদাহ অনুভব করো জাহান্নামের আগুন এর থেকে অনেক বেশি উত্তপ্ত। হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, দুনিয়ার সমস্ত আগুনের চাইতে জাহান্নামের আগুন ৭০ গুণ বেশি উত্তপ্ত।
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, একজন ঈমানদার জাহান্নামের আগুনের কথা অনুভব করে সেখান থেকে বাঁচার চেষ্টা করবেন ভালো মানুষ হওয়ার মাধ্যমে। এটি করণীয় এর মধ্যে পড়ে। আমরা যখনই কষ্ট অনুভব করবো তখনই আমরা বলবো- হে আল্লাহ আপনি আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন।
দুনিয়ার আগুনের তাপ যদি এমন হয়। সূর্য লক্ষ কোটি মাইল দূরে থাকার পরেও যখন এই সূর্য মাথার খুব কাছাকাছি থাকবে তখন কি অবস্থা হবে আমাদের সেটা সহজেই অনুমেয়। অতএব একজন ঈমানদার এখান থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে সৎ জীবন-যাপন করার চেষ্টায় রত থাকবেন। প্রতি বিপদ থেকে আমাদের শেখা ও অনুভব করার আছে। শিক্ষা নেয়ার আছে। গরমের কষ্ট হোক বা শীতের তীব্রতা হোক সেখান থেকেও আমাদের করণীয়গুলো তুলে আনতে হবে। কারণ ঈমানদারের দৃষ্টিভঙ্গি হবে- আমাকে তো আখেরাতে ফিরে যেতে হবে।
গরমে আমরা অনেকেই প্রকৃতিকে গালমন্দ করি। তিরমিজির একটি হাদিসে নবী (সা.) বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন কোনো বস্তুকে অভিশাপ দেয়, কিন্তু সে বস্তুটি অভিশাপ পাওয়ার বস্তু নয়। তখন সে অভিশাপ তার দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়। তাই একজন ঈমানদার সহনশীল হবেন। গরমে একটি আমল করার ব্যাপারে আমরা নির্দেশনা পাই সেটা হচ্ছে পানি পানের ব্যবস্থা করা। সেটা মানুষের জন্য যেমন হতে পারে, তেমনি পশু-পাখির জন্যও হতে পারে। নবীকে জিজ্ঞাস করা হয়েছিল- কোন দান সবচেয়ে উত্তম? তখন তিনি বলেছিলেন, পানি পান করানো। এর মাধ্যমে রসূল (সা.) পশু-পাখি থেকে শুরু করে সবাইকে পানি পান করাকে বুঝিয়েছেন।