Friday, November 22, 2024

দ্বিতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চলছে বঙ্গবাজারে

আরও পড়ুন

রাজধানীর বঙ্গবাজারে বহুতল নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দ্বিতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযানে ভেঙে ফেলা হচ্ছে অস্থায়ী সব দোকান।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকেই এই কার্যক্রম শুরু করে সিটি কর্পোরেশন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবাজারের সামনের অংশে একটি ভেকু দিয়ে বাঁশের কাঠামো সরিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সেখানে উপস্থিত থেকে মোবাইলে উচ্ছেদ অভিযানের দৃশ্য ধারণ করতে দেখা যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউ।

এর আগে গতকাল (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বঙ্গবাজারের অস্থায়ী দোকানগুলো উচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু হয়। সংস্থাটির সম্পত্তি বিভাগের উদ্যোগে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়ে গেলেন স্ত্রী!

গত বছরের ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় রাজধানীর সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় পাইকারি কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজার। পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের আধুনিকায়ন করে সেখানে ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। সেখানে ১.৭৯ একর জায়গার ওপর ১০ তলাবিশিষ্ট একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা সিটি কর্পোরেশনের। সেইসঙ্গে বঙ্গবাজারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হচ্ছে বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপণিবিতান।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১০ তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে গ্রাউন্ড ফ্লোর ও বেজমেন্ট ছাড়াও থাকবে মোট আটটি ফ্লোর। ভবনে থাকবে তিন হাজার ৪২টি দোকান। প্রতিটি দোকানের আয়তন হবে ৮০-১০০ স্কয়ার ফুট। ভবনটিতে থাকবে আটটি লিফট। এর মধ্যে চারটি থাকবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য। আর বাকি চারটি কার্গো লিফট থাকবে মালামাল ওঠানো-নামানোর জন্য। এছাড়া থাকছে গাড়ি পার্কিং, খাবারের দোকান, সমিতির অফিস, নিরাপত্তাকর্মী এবং সেখানকার কর্মীদের আবাসন ব্যবস্থা। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি টাকা।

আরও পড়ুনঃ  গভীর রাতে ঘরে ঢুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা, আশঙ্কাজনক স্বামী

ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক এ ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে মোট ৩৮৪টি, প্রথম তলায় ৩৬৬টি, দ্বিতীয় তলায় ৩৯৭টি, তৃতীয় তলায় ৩৮৭টি, চতুর্থ তলায় ৪০৪টি, পঞ্চম তলায় ৩৮৭টি, ষষ্ঠ তলায় ৪০৪টি ও সপ্তম তলায় ৩১৩টি দোকান থাকবে। এ ছাড়া, অষ্টম তলায় দোকান মালিক সমিতির অফিস, কর্মচারী ও নিরাপত্তাকর্মীদের আবাসনের ব্যবস্থা রাখা হবে। ভবনের পার্কিংয়ে একসঙ্গে প্রায় ১৮৫টি গাড়ি ও ১১০টি মোটরসাইকেল পার্কিং করা যাবে। ভবনটিতে ২২টি খাবারের দোকান রাখা হবে। সেইসঙ্গে নকশায় আরও ৮১টির বেশি দোকান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে স্ত্রীর আত্মহত্যা

বঙ্গবাজারের পুরাতন মার্কেটটি মূলত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, আদর্শ ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও গুলিস্তান ইউনিট নিয়ে গঠিত ছিল। গত ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মার্কেটগুলো পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়। এছাড়া, মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, এনেক্সকো টাওয়ার, বঙ্গ হোমিও মার্কেট এবং বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের কিছু অংশেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে তিন হাজার ৮৪৫ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।

অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৩০৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতোদিন পর্যন্ত পুড়ে যাওয়া মার্কেটের ফাঁকা স্থানে শামিয়ানা ও ছোট ছোট চৌকি বসিয়ে কোনোমতে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ